একটি ৪০ ওয়াট সড়কবাতির দাম ৩২ হাজার টাকা!

নিউজ ডেস্ক আগস্ট ১৭, ২০২১, ০১:৫৮ পিএম

ঢাকাঃ অস্বাভাবিক দাম ধরা হয়েছে কক্সবাজার পৌরসভার জন্য বিভিন্ন ওয়াটের এলইডি সড়কবাতির। পরিকল্পনা কমিশন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় প্রতিটি ৪০ ওয়াট লাইটের দাম ৩১ হাজার ৯৭১ টাকা, প্রতিটি ৬০ ওয়াট লাইটের দাম ৫৫ হাজার ৩২১ টাকা, প্রতিটি ৮০ ওয়াট লাইটের দাম ৬৬ হাজার ৬৯৭ টাকা এবং প্রতিটি ১০০ ওয়াট লাইটের দাম ৬৯ হাজার ৬৯০ টাকা ধরা হয়েছে।

এমন ব্যয় প্রাক্কলনের যৌক্তিকতার বিষয়ে জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এমনকি এ ব্যয় অস্বাভাবিক দাবি করে তা কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনারও সুপারিশ ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও কক্সবাজার পৌরসভা। সংস্থা দুটির কাছে ব্যয় নির্ধারণের যৌক্তিকতা জানতে চাওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৪৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।

‘কক্সবাজার পৌরসভার রাস্তাগুলোতে এলইডি সড়ক বাতি সরবরাহ ও স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের ওপর সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন আল রশীদের সভাপতিত্বে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা সংকটের কারণে ভার্চ্যুয়ালি পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এলইডি সড়কবাতির ব্যয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পে কোনো গাড়ি কেনার প্রস্তাব না থাকলেও পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ ব্যয় চাওয়া হয়েছে। ব্যয় চাওয়ার বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন।  

সভাকে জানানো হয়, এলজিইডির সিটি গভর্নেন্স প্রজেক্টের আওতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে এলইডি সড়কবাতির দর এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে পরিকল্পনা কমিশন ওয়েস্টার্ন ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী এলইডি বাতির বর্তমান বাজার দর, বিভিন্ন ওয়েব সাইটের তথ্য সমন্বয়ে ব্যয় করার জন্য সভায় একমত পোষণ করা হয়। একইসঙ্গে কেনা বাতি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির দাম নির্ধারণের জন্য কারিগরি দক্ষতা সম্পন্ন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে কমিশন। এই কমিটর মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করা হবে। কমিটির সব সদস্যের সিল স্বাক্ষর ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংযোজন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন-আল-রশীদ বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় সড়কবাতির দাম বেশি ধরা হয়েছে। এই দাম কোথায় পেলো, কীসের ভিত্তিতে দাম ধরা হয়েছে এই বিষয়ে জানতে চেয়েছি। দাম নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করার জন্য বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে পিডিবি অনুমতি লাগবে। প্রকল্পটি ভালো। কারণ কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সড়কবাতি লাগবে, যাতে করে পর্যটকেরা রাতেও নিরাপদে চলাচল করতে পারেন।  

যেসব স্থানে এলইডি লাইট স্থাপন করা হবে সেসব স্থানে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কোনো স্থাপনা বা পোল থাকলে তা প্রকল্প বাস্তবায়নের পর কী করা হবে, পিডিবির বর্তমান স্থাপনা/পোল অপসারণের ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি বিষয়ে পিডিবির সঙ্গে সভা করে একটি এমওইউ সম্পন্ন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। যেহেতু এলইডি বাতি স্থাপনের মাধ্যমে কক্সবাজারকে অত্যাধুনিক পর্যটন নগরী করার কথা বলা হচ্ছে। ওভারহেড তার মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগ বিবেচনা করতে পারে বলে মতামত দিয়েছে কমিশন।