ঢাকাঃ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা আজ।বিশ্বের মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। চলমান মহামারির প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। সংগতকারণেই এবারও ঈদে আনন্দের স্বাভাবিক উচ্ছ্বাসটা কম।
ঈদুল আজহা সামনে রেখে সরকার একসপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করলেও অবশ্য একদিন আবার কঠোর লকডাউন কার্যকর হবে। সামনে সংক্রমণ পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, সেই শঙ্কা নিয়েই বুধবার পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা।
মহামারীর মধ্যে আগের তিনটি ঈদের মতো এই কোরবানির ঈদেও ঈদের নামাজ পড়তে হবে মসজিদে। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার কিংবা দিনাজপুরের গোর-ই শহীদ ময়দানেও এবার ঈদের জামাত হচ্ছে না।
লোভ, হিংসা ত্যাগ করে, নিজের ভেতরের পশুত্বকে কোরবানি করার ভেতর দিয়ে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করাই এই ঈদের মূল তাৎপর্য। হজরত ইব্রাহিম (আ.) যেমন করে মহান আল্লাহর নির্দেশে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন, সেই ত্যাগকে স্মরণ করে বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে পশু কোরবানি করবে।
প্রায় চার হাজার বছর আগে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে। তবে ঈদের পরও দুই দিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করার ধর্মীয় বিধান আছে।
করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহাতেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি ও হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে সরকার নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করে এবং কোরবানির বর্জ্য যথাস্থানে ফেলে পরিবেশদূষণ বন্ধে সবাই সচেষ্ট থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমূলক কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে ঈদুল আজহায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় ও পশু কোরবানি দেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে গোটা দেশে। এসময় স্বাস্ত্যবিধি ও সাবধানতা অবলম্বন করা না হলে দেশে সংক্রমণের হারে আরও বেড়ে যেতে পারে। এতে মহামারি পরিস্থিতি হয়ে ওঠবে ভয়াবহ, করোনা সংক্রমণ চলে যাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।