আবারও অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৯, ২০২১, ০২:৫৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আবারও গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

সোমবার (২৯ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে করোনা প্রতিরোধে মোট ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়। সেখানে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করতে হবে। মসজিদ, মন্দিরসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া পর্যটন কেন্দ্র, সিনেমা হলে জনসমাগম সীমিত করতে এবং সকল ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়।

এর আগে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ৩১ মে থেকে গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখতে বলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। তখন বাস মালিকদের দাবির মুখে বাস ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়ায় সরকার। এর আগে দীর্ঘদিন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে।

তবে করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও বাসের সব সিটে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়।

সরকারের দেয়া ১৮ দফা নির্দেশনা

১. সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৩. মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।

৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৯. শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

১১. অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/ আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

১২. করোনায় আক্রান্ত/ করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদেরও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/ বয়স ৫৫-ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

১৭. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

১৮. হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

আগামীনিউজ/মালেক