আজ ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস

ডেস্ক রিপোর্ট জানুয়ারি ২৪, ২০২১, ১০:৩২ এএম
ফাইল ছবি

ঢাকাঃ আজ ২৪ জানুয়ারি, বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মাইলফলক ঊনসত্তরের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস। ১৯৬৯ সালের এই দিনে গণ-অভ্যুত্থানের কারণে তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরাচারি আইয়ুব খান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব
আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা, পরবর্তীতে ১১ দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে রক্তাক্ত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি অর্জন করে মহান স্বাধীনতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঔপনিবেশিক পাকিস্তানী শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। এতে স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্রতর হয়। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আন্দোলনকে নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে বঙ্গবন্ধুকে বন্দী করে। 

পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের ১৯ জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা স্বৈরাচারী আইয়ুব দমন-পীড়নের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। 

এর পর ঐতিহাসিক ২০ জানুয়ারি ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ আসাদের আত্মদানের পর ২১, ২২, ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে ঢাকায় সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ২৪ জানুয়ারি এই অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়। 

ঊনসত্তরের এদিন ঢাকায় সচিবালয়ের সামনের রাজপথে নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণীর ছাত্র কিশোর মতিউর ও রুস্তম শহীদ হন।  জনগণ আইয়ুবগেটের নাম পরিবর্তন করে আসাদগেইট নামকরণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। এতে স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্র হলে পাকিস্তানিরা একে নস্যাৎ করতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে। মামলার প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধুসহ অন্য আসামিদের মুক্তির এবং পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের দাবিতে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি কারফিউ ভঙ্গ করে সাধারণ মানুষ মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান।


রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, এই দিনের আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ফলাফল ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও আইয়ুব খানের ক্ষমতা হস্তান্তর। গণ-অভ্যুত্থানের পথ ধরে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান আজও এ দেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। দলমত-নির্বিশেষে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানতিনি।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদ মতিউর স্মৃতিসৌধে (নবকুমার ইনস্টিটিউট, বকশীবাজার, ঢাকা) শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আগামীনিউজ/সোহেল