ঢাকাঃ স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ড্রাইভার আবদুল মালেক সেন্টুর দুটি মামলা তদন্তের অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গতকাল বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) র্যাবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনটি করা হয়। এদিকে র্যাবের প্রাথমিক তদন্তে আবদুল মালেক বিদেশে টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত (১৯ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী মহাপরিচালকের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভারকে গ্রেফতার করে র্যাব। এসময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। যা দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর তুরাগ থানায় দুটি মামলা করে। একটি অস্ত্র আইনে, অপরটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে তিনি (মালেক ড্রাইভার) অবৈধভাবে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার এই সম্পদের একটি অংশ বিদেশে পাচার করতে পারে বলে তথ্য এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে মালেকের মানিলন্ডারিং বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। পাশাপাশি তুরাগ থানায় হওয়া দুটি মামলা তদন্তের অনুমতি চেয়ে পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে র্যাব।
অনুমোদন পেলে র্যাব আবদুল মালেক ড্রাইভারকে তাদের হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
তাকে গ্রেফতারের পর র্যাবের কাছে যে তথ্য এসেছে তাতে তার আয়ের সঙ্গে পেশার অসামাঞ্জস্যতা নিয়ে অবাক হয়েছে বাহিনীটি। এই আয়ের পেছনে তাকে সহযোগিতাকারীদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে দুদক।
এক প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, তিনি (মালেক) যে পরিমাণ আয় করেছেন তার কতটা অংশ অবৈধ বা বৈধভাবে পাচার করেছেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তদন্তের পরে বলা যাবে।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্য অভিযোগ বা আর্থিক অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুদক কাজ শুরু করেছে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরে গাড়ি চালক হিসেবে যোগ দেন ১৯৮২ সালের দিকে। বর্তমানে কাগজে-কলমে তিনি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত। কিন্তু ডা. এনায়েত হোসেন যে টয়োটা ভিগো (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৮-৩৯৫১) গাড়ি ব্যবহার করেন সেটির চালক হারুন নামে একজন। এর আগে এনায়েত হোসেন যখন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) ছিলেন তখন তার গাড়ির চালক ছিলেন আবদুল মালেক। সেই সময় ডা. এনায়েত হোসেনের জন্য বরাদ্দ ছিল একটি সাদা পাজেরো জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩-২৯৭৯)। পরবর্তী সময়ে তিনি মহাপরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ায় নতুন গাড়ি ব্যবহার করলেও পুরনো গাড়িটি ব্যবহার করতে থাকেন আবদুল মালেক। ব্যক্তিগতভাবেই তিনি গাড়িটি বাসায় যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতেন বলে জানা গেছে।
আগামীনিউজ/জেহিন