চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছেন ৭৮ হাজারেরও বেশি কর্মী : প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২৩, ২০২০, ১২:৩৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা : কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর গত ১ এপ্রিল থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশ থেকে চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছেন ৭৮ হাজারেরও বেশি কর্মী। 

শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ সাংবাদিকদের একথা জানান। 

দেশে ফেরত আসা কর্মীদের কেউ এসেছেন কাজ হারিয়ে, কেউ ভিসার মেয়াদ নবায়ন না হওয়ায়। অনেকেই বিভিন্ন দেশে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফিরেছেন। বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক এ হিসাব দিয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক ফখরুল আলম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন গত বৃহস্পতিবার এ হিসাব প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৩টি দেশ থেকে কর্মী ফেরত এসেছেন।

সবচেয়ে বেশি ফেরত এসেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। সে সংখ্যা ২৩ হাজার ৫০২ জন। চাকরি হারানো এসব কর্মীদের মধ্যে তিন হাজার ৩০৮ জন নারী। সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার ৭৬ জন নারীকর্মী ফেরত এসেছেন। দেশটি থেকে সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৯৫০ জন ফেরত এসেছেন। 

আরব আমিরাতে কাজ না থাকায় নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার তারা আরব আমিরাত যেতে পারবেন।

তৃতীয় সর্বোচ্চ মালদ্বীপ থেকে ফিরেছেন ৭ হাজার ৭৫৯ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটননির্ভর মালদ্বীপে কাজ না থাকায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।

কুয়েত থেকে ফেরত এসেছেন সাত হাজার ৩২৯ জন। তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে ভিসা ও আকামার মেয়াদ শেষ হওয়ায়। সাধারণ ক্ষমার আওতায় ফিরেছেন তারা। ওমান থেকে ফিরেছেন তিন হাজার ৬৪৫ জন। তারাও আউট পাস নিয়ে ফিরেছেন। 

সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা এক হাজার ৩৮২ জনের ভিসার মেয়াদ নবায়ন হয়নি বিধায় ফিরতে হয়েছে। কাতার থেকে ছয় হাজার ৬৮ জন ফিরেছেন চাকরি চলে যাওয়ায়। অন্য কাজ না পেয়ে তারা দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

একই কারণে মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছেন ১ হাজার ৮৩৮ জন। ইরাক থেকেও  ফিরেছেন ১ হাজার ৪১৯ জন।

ইতালি থেকে ফেরত এসেছেন ১৫১ জন। তারা গত ৬ জুলাই ইতালি ফিরে গিয়েছিলেন। করোনা সন্দেহে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তুরস্ক থেকে ফেরত এসেছেন এক হাজার ৭৩০ জন। বৈরুতে বিস্ম্ফোরণে বিধ্বস্ত লেবানন থেকে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন ১২০ নারীকর্মীসহ ৫৬৪ বাংলাদেশি কর্মী। 

কাজ না পেয়ে ভিয়েতনাম থেকে ফিরেছেন ১২২ জন। কাজের মেয়াদ নবায়ন না হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১০০ জনকে ফিরতে হয়েছে। কাজ না পেয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আরও দুই হাজারের মতো কর্মী ফেরত এসেছেন।

এরই মধ্যে বিভিন্ন নিয়োগকারী দেশকে কর্মী ফেরত না পাঠাতে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে সরকার। করোনায় বেকার হয়ে পড়া কর্মীদের অন্য খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতেও অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।

প্রবাসী কর্মীরা বিদেশে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে আসার পর ব্যবসা করার জন্য সরকার থেকে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা পাচ্ছেন। আর বিমানবন্দরে ফিরেই পাচ্ছেন ৫ হাজার টাকা। কোনো প্রবাসী কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বিদেশে মারা গেলে তার পরিবার সরকার থেকে পাচ্ছে ৩ লাখ টাকা।

আগামীনিউজ/এসপি