করোনা মোকাবেলায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে সহায়তার অংশ হিসেবে ভাইরাসটি শনাক্তে বাংলাদেশকে আরটি-পিসিআর কিট দিয়েছে ভারত। সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে তৃতীয় চালান বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে হস্তান্তর করেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ।
ভারতের হস্তান্তর করা কিটগুলোর সাহায্যে অন্তত ৩০ হাজার পরীক্ষা করা সম্ভব বলে ভারতীয় হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। সেখানে বলা হয়, কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে ভারতে বহুল ব্যবহৃত কিট এই প্রথম অংশীদার দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হলো।
দুই দেশের মধ্যকার কালোত্তীর্ণ বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মহামারি সংক্রমণের পর তিন দফায় ভারতের সহায়তার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘শনাক্তকরণ কিটগুলো বাংলাদেশে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে, যা এ মুহূর্তে খুব প্রয়োজন।’
ভারতীয় হাইকমিশনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তার দপ্তরে চিকিৎসা সহায়তা হস্তান্তরের সময় জানান, আরটি-পিসিআর শনাক্তকরণ কিটগুলো ভারতের ‘মাই ল্যাব ডিসকভারি সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড’ উৎপাদন করেছে। ভারতে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণের জন্য এটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, ‘বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই শনাক্তকরণ কিটপ্রাপ্ত প্রথম অংশীদার দেশ, যা এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি ভারতের গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।‘
ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ নীতির অংশ হিসেবে এবং কোভিড-১৯–এর বিস্তার রোধে একটি সহযোগিতামূলক আঞ্চলিক প্রচেষ্টার লক্ষ্যে ১৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সার্ক নেতাদের নিয়ে একটি ভিডিও সম্মেলন করেছিলেন।
ভারতীয় হাইকমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিলের আওতায় এর বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সাহায্য করার উদ্দেশ্যে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার উপযোগী এই পরীক্ষার কিটগুলো বাংলাদেশ সরকারকে ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষার কিটগুলো বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার কিটগুলো প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় সংরতি অবস্থায় ইন্ডিগোর একটি ফাইটে বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর আইইডিসিআরে পাঠানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষণায় ভারতের ১০ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক সহায়তা নিয়ে সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠিত হয়। এই তহবিলের অধীনে ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক ও ১৫ হাজার হেড-কভার সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সহায়তার প্রথম চালান ২৫ মার্চ বাংলাদেশকে দেওয়া হয়। এরপর ২৬ এপ্রিল এক লাখ হাইড্রোক্সিকোরোকুইন ট্যাবলেট ও ৫০ হাজার জীবাণুমুক্ত সার্জিক্যাল ল্যাটেক্স গ্লাভস সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সরবরাহের দ্বিতীয় চালানটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আগামী নিউজ/ ইমরান/ তাওসিফ