ঢাকা: করোনা এখন বৈশ্বিক মহামারী। মানবিক এই বিপর্যয়কে প্রতিহত করার লক্ষ্যে বিশ্বের সকল জনগোষ্ঠীর দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন লক্ষ্য করছে যে, করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সামাজিক দূরত্ব অপরিহার্য বিবেচনায় সর্বসাধারণকে ঘরে থাকার জন্য সরকার বিভিন্ন অনুশাসন সহ গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৪ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। কিন্তু শ্রমজীবীগণ ছুটির আমেজ নিয়ে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মাথায় না রেখে গাদাগাদি করে শহর ছাড়তে থাকেন যা প্রকারন্তরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
রোববার (৫ এপ্রিল) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরবর্তীতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জনগণ যাতে ঘরে থাকেন, সে লক্ষ্যে সরকার এই সাধারণ ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করে। কিন্তু এই বর্ধিত ছুটির বিষয়ে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ থেকে কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে শ্রমজীবী মানুষের ঢল নামে।
সংবাদ মাধ্যমের সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা যায় গত শনিবার সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ও মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের জনস্রোত সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কোন পরোয়াই করেনি। সরকারের যেখানে ঘরে থাকার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং তা পরিপালনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে, সেখানে এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব কোন ভাবেই কাম্য নয়।
এতে করে একদিকে যেমন শ্রমজীবী এক একজন মানুষ নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন, তেমনি তার আশেপাশের প্রতি জন ব্যক্তিকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। এর ফলে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির প্রত্যাশিত ফলাফল পুরোটাই এখন শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। এরকম উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পোশাক কারখানায় যোগদানকৃত শ্রমিক-কর্মচারীর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি মোকাবেলায় মালিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সংকটকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল এবং মানবিক আচরণ করতে কমিশন অনুরোধ জানায়।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যেখানে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন বিকল্প নেই, সেখানে নিজেকে ঘরবন্দি রাখার সাময়িক কষ্ট হলেও তা স্বীকার করে নিয়ে ব্যক্তি থেকে সমষ্টি, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের দায়িত্বশীলতার সাথে তা অনুসরণ করার জন্যও আহ্বান জানায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আসুন সকলে মিলে সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। নিজের ঘরে অবস্থান করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করে সন্তানদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করি। একে অন্যের বিপদে দূরে থেকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখি। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করি।
আগামী নিউজ/ সুমন/ তাওসিফ