পরিবহনের সময় পণ্য নিয়ে লাপাত্তা, পরে নিজেরাই করত বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম

ঢাকাঃ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাসা পরিবর্তন কিংবা পণ্য পরিবহনের নামে মালামাল আত্মসাৎকারী একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চুক্তির পর স্থানান্তরের সময় পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের নম্বর প্লেট ও রং পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্য হাতিয়ে নিত চক্রটি। 

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রাজিব হোসেন (২৪), মো. রাকিব হোসেন (৩০), চয়ন কুমার ঘোষ (৩২) ও  মো. রেজাউল করিম (৪৫)।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর পল্লবী, কেরানীগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি মিরপুর বিভাগের একটি দল। এ সময় তাদের কাছ থেকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক ও হাতিয়ে নেওয়া ৬৫টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়। 

শনিবার ( ১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান। 

হারুন বলেন, সম্প্রতি আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি চক্র রাজধানীসহ সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে ট্রাকে খাদ্যশস্য, ব্যাটারি বা বাসা পরিবর্তনের মালামাল পরিবহনের জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তারা মালিকের কাছ থেকে মাল বুঝে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে না দিয়ে বিক্রি করে দিত।

চক্রের সদস্যরা নিজেদের আড়াল করতে মালামাল পরিবহনের সময় গাড়ির ভুয়া কাগজপত্র ও ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করত। কাজ শেষ হলে তারা গাড়ির রং ও নম্বর পরিবর্তন করে আরেকটি টার্গেট নির্ধারণ করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল।

ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি খুলনার সোনাডাঙ্গার এক ব্যবসায়ী নতুন পুরাতন মিলিয়ে ৩৫৫টি ব্যাটারি মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার সুমন এন্টারপ্রাইজের উদ্দেশ্যে একটি ভাড়া ট্রাকে পাঠান। সঙ্গে তার কর্মচারী বিষ্ণু বিশ্বাসকে পাঠান। 

সাড়ে ১৫ হাজার টাকায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার চুক্তিতে খুলনা থেকে ঢাকায় আসে। কিন্তু এরপরই বদলে যায় তাদের গন্তব্য। মুন্সিগঞ্জের বদলে তারা কৌশলে কর্মচারী বিষ্ণুকে নামিয়ে দিয়ে নিজেদের গন্তব্যে চলে যায়। এরপর ৩৫৫টি ব্যাটারির মধ্যে ২৯০টি তারা রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করে দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান বলেন, এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন মার্কেটে চোরাই পণ্য বিক্রি করত। আমরা বেশ কিছু নাম-নাম্বার পেয়েছি। যারা চোরাই পণ্য কেনে তারাও চুরি মামলার আসামি হবে। 

তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, চাই পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

এই চক্রের অভিনব কৌশলের বিষয় গোয়েন্দা পুলিশের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. রাশেদ হাসান বলেন, এই চক্রটি প্রতিটি কাজ শেষ করে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকটির নাম্বার ও রং পরিবর্তন করে ফেলত। যার প্রমাণ পেয়েছি খুলনা থেকে আনা পণ্য বিক্রির পর তারা রাজধানীর বাড্ডা থানার মেরুল বাড্ডা বাঁশপট্টি এলাকায় রং পরিবর্তন করার সময়ে হাতেনাতে জব্দ করে। এই সময়ে ট্রাকটিতে লাগানো আগের নম্বর প্লেট ছিল না।


এমআইসি/