নোয়াখালীঃ জেলার কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির এর আগেও হাসান ইমাম রাসেল নামের এক কথিত সাংবাদিক কর্তৃক শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বছর দেড়েক আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরে মুজাক্কিরকে নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও বর্তমানে সংবাদকর্মী ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের কাছে সংরক্ষিত আছে বলে নিশ্চিত করেছে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মীর জাহিদুল হক রনি।
ঐ ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, কোম্পানীগঞ্জের কথিত সাংবাদিক হাসান ইমাম রাসেল কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারের একটি ইলেকট্রিক দোকানের সামনে রেখে সাংবাদিক মুজাক্কিরকে মারধর করে।
এ সময় মুজাক্কিরকে মারধর করতে করতে অকথ্যভাষায় গালমন্দ করে হাসান ইমাম রাসেল। তিনি নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় বলেন ‘বোলা কারে বোলাইবি বোলা, তোর কোন বাপ আছে বোলা, বোলাছ্যা না, কারে বোলাবি বোলা’ যা রেকর্ডকৃত ওই ভিডিওচিত্রে রয়েছে।
এ নির্যাতনের সময় সাংবাদিক মুজাক্কিরকে নির্যাতনকারী রাসেলের অপর সহযোগীর— চলে যা চলে যা বলে কথার রেকর্ডও রয়েছে। পরে সে গিয়ে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেন।
এর কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, মুজাক্কিরকে ওই স্থান থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। মুজাক্কিরকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে চিহ্নিত করে এ নির্যাতন করা হয় বলে আওয়ামী লীগের অনেকেই দাবি করেছেন। অপরদিকে মুজাক্কির হত্যাকাণ্ডের পর মিজানুর রহমান বাদলও তাকে তার কর্মী বলে দাবি করে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে হাসান ইমাম রাসেলের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি লাইনটি কেটে দেন।
তবে তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন— মুজাক্কির আমাদের সঙ্গে কাজ করত, তখন যে মাঝে মাঝে আসত। নোয়াখালীতে পড়াশোনা করত। কারও প্ররোচনায় পড়ে সে আমার ফেসবুকে ফেক আইডি থেকে বাজে কমেন্ট করত। তখন রনির দোকানে তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেন এসব করছ। সে বলল, বাদল ভাইয়ের বিরোধিতা করেন সে জন্য আমি এমন করছি, তখন রাগ করে তাকে বকাঝকা করছি।
এর ৫ মিনিট পরই আবার তাকে বুকে টেনে নিয়েছি। তিনি দাবি করেন মুজাক্কিরের মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি আগামী নিউজকে বলেন, মুজাক্কিরকে নির্যাতনের ভিডিওটি ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
ভিডিওটিতে দেখা গেছে, উপজেলার কথিত সাংবাদিক রাসেল (হাসান ইমাম রাসেল) মুজাক্কিরকে গালমন্দ ও মারধর করছে। ওই দোকানটা বসুরহাট বাজারের অন্য একজন সাংবাদিকের।
ওই সাংবাদিক আমাদের জানিয়েছেন, মুজাক্কিরকে রাসেল মারধর করতে দেখে তিনি এসে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভিডিওটি দেখছেন। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আগামীনিউজ/এএস