ঢাকাঃ ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় পলাতক ৩৯ জনকে গ্রেফতারে রেড নোটিশ জারির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র্যাব মহাপরিচালককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
মামলার অন্যতম আসামি সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের জামিন আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে হারুনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জামিন আবেদন নামঞ্জুর, আপিল আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার (অ্যাডমিশন) বিষয়ে শুনানি, মামলার সব রেকর্ড কল, পেপার বুক প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে মামলায় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে আইজিপি পুলিশ, এসিসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পলাতকদের গ্রেফতারে সংশ্লিষ্টদের রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২০০০ সালে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি দিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। পরের বছরে বিমান পরিবহন, আবাসন, মিডিয়া, পাটকল, কোল্ড স্টোরেজ, বনায়নসহ বিভিন্ন খাতে ৩৪টি কোম্পানিতে ডেসটিনির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়।
পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে চার হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে এ কোম্পানির বিরুদ্ধে।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই কলাবাগান থানায় মামলা করে দুদক। ২০১৬ সালের ২৪ অগাস্টে অভিযোগ গঠন করে আদালত আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত ১২ মে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু একই মামলায় কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের’ কথা বিবেচনায় নিয়ে আদালত তার সাজা কমিয়ে দেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায়ে ৪৬ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করেন।
পরে ওই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে তিনি হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন।
এমবুইউ