বিদ্যুতের লাইনে হাত-পা হারানো শিশুকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৮, ২০২১, ০৩:২৪ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ সাতক্ষীরায় পল্লী বিদ্যুতের লাইনে জড়িয়ে হাত-পা হারানো সাত বছরের শিশুর রাকিবুজ্জামানকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে তার কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে এবং কত টাকা খরচ হতে পারে তার একটি সম্ভাব্য খরচের তথ্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটকে জানাতে বলা হয়েছে। সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার (৮ অক্টোবর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদেশে অঙ্গ হারানো শিশু রাকিবুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন করা বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ দেওয়ার জন্য সেখানকার অফিসের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি বিশেষ বার্তায় বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের জানাতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে আরও শুনানির জন্য আগামী ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহম্মদ তারিকুল ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। এ সময় শিশুটির বাবা ও বোনও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রোববার (৭ নভেম্বর) রাকিবুজ্জামানের জন্য ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। শিশুটির বাবা মো. আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এ রিট দায়ের করেন।

রিটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়নের চেয়ারম্যান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজার, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার, প্রকল্প পরিচালক, সাতক্ষীরার ডিসি ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শককে বিবাদী করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার প্রতাপনগরের মো. আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর দ্বিতল বাসার ওপর দিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্যাপ ও কভারহীন বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হয়। এর আগে ২০ মার্চ আব্দুর রাজ্জাক পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর উক্ত আবাসিক ভবনের ওপর দিয়ে টানা বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ না দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।

পরবর্তীতে গত ৯ মে আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর ৭ বছরের শিশুপুত্র রাকিবুজ্জামান ওই বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়। এতে তার শরীর ঝলসে হাড়-মাংস খসে পড়ে। রাকিবুজ্জামানকে দ্রুত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ মে রাকিবুজ্জামানের ডান হাতের বগল থেকে ও ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।

এ ঘটনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ২৫ মে আব্দুর আব্দুর রাজ্জাক ঢালী সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষতিপূরণসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে শিশুর বাবা আব্দুর রাজ্জাক ঢালী ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।

আগামীনিউজ/বুরহান