এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না মিন্নি

ডেস্ক রিপোর্ট অক্টোবর ৩, ২০২০, ০১:০১ পিএম
ছবি সংগৃহীত

ঢাকাঃ আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। বয়স সবে ২০’র কোঠায়। এর মধ্যে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পেয়ে কনডেম সেলে অবস্থান করছেন তিনি। বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নির বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ হয়েছে; আর সেই বিষয়টি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। এমনটাই জানিয়েছেন বরগুনা জেলা কারাগারের জেল সুপার।

২০১৯ সালের (২৬ জুন) আলোচিত ওই ঘটনায় দায়ের মামলায় গত বুধবার মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত; খালাস পেয়েছেন চারজন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।

এর মধ্যে মিন্নিকে রাখা হয়েছে একটি কনডেম সেলে। বাকিরা আছেন আরেকটিতে। জেলা কারাগারের কনডেম সেলে মিন্নিই একমাত্র নারী কয়েদি।

এই প্রসঙ্গে জেল সুপার আনোয়ার হোসেন গতকাল শুক্রবার (০২অক্টোম্বর) রাতে জানান, মিন্নি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। নিজের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি।

জেল সুপার বলেন, সাধারণত মৃত্যুদণ্ডদেশপ্রাপ্তদের জন্য আলাদা কক্ষ, পোশাক ও বিছানার ব্যবস্থা থাকলেও সাধারণ বন্দিদের মতোই দণ্ডিতদের খাবার দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাতে মিন্নিসহ ছয় আসামিরই খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, গরুর মাংস ও ডাল। সকালে তাদের রুটি ও ডাল দেওয়া হয়েছে।

অপরিদকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর অভিযোগ করে শুক্রবার জানান, গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমার ও আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে মিন্নি। সে সময় অনেক কান্নাকাটি করেছে মিন্নি। সে জানালো তাকে একা একটি নির্জনকক্ষে রাখা হয়েছে। সেখানে কান্নাকাটি করেই তার সময় কাটছে। ঠিকমতো ঘুমাচ্ছেও না।

মিন্নির বাবা এও দাবি করেন, আমার মেয়ে মিন্নি একেবারে নির্দোষ। তাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমি রায়ের কপির জন্য আবেদন করেছি। হাতে পেলেই উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো। আমি জানি আমার মেয়ে নির্দোষ। উচ্চ আদালতে সেটা প্রমাণিত হবে।

মিন্নির বাবা এও বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনজীবীদের সঙ্গে এরই মধ্যে কথা হয়েছে।

২০১৯ সালের (২৬ জুন) বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে হাসপাতালে মারা যান তিনি। এই ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ালে তোলপাড় হয় দেশ জুড়ে।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা ১২ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী রাখা হয়। তবে তদন্তে তারও সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।

ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ ও কিশোর ১৪ জনের আলাদা বিচার শুরু হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের অভিযোগপত্রে মিন্নিকে ৭ নম্বর আসামি রাখা হয়।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনসহ ৪৩ কার্যদিবসে বিচার শেষ হয়।

আগামীনিউজ/জেহিন