জাতিসংঘের গাজা প্রস্তাব নিয়ে হামাস-পিএর বিভক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩, ১০:০৭ এএম

ঢাকাঃ জাতিসংঘে গাজা উপত্যকার যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কিত সর্বশেষ পাস হওয়া রেজোল্যুশন বা প্রস্তাবটি নিয়ে পরস্পরবিরোধী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এবং হামাস।

শুক্রবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার প্রবাহ আরও বাড়ানো বিষয়ক একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে উপত্যকায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি চেয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তোলা হয়েছিল, তবে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির জেরে তা বাতিল হয়ে যায়।

পরিষদে নতুন প্রস্তাব পাস হওয়ার পর এক তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ‘জাতিসংঘের এই প্রস্তাব সঠিক নির্দেশনায় এগিয়ে চলার পথে একটি কার্যকর পদক্ষেপ। ফিলিস্তিন আশা করছে, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ, ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা প্রবাহ অব্যাহত রাখা এবং ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে রেজোল্যুশনটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।’

‘আমরা আরও আশা করছি, বর্তমানে গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা যে ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে তাদের দিন-রাত পার করছে, তারও অবসান ঘটবে শিগগিরই।’

এদিকে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী এবং পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হামাস এ প্রস্তাবে সরাসরি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। গোষ্ঠীটির মতে, এই প্রস্তাবটি ফিলিস্তিনিদের স্বাধিকারের পক্ষে যায়নি।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে হামাসের হাই কমান্ড বলেছে, ‘গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। তারপর বিগত ৫ দিনে মার্কিন প্রশাসন সেটিকে কাটাছেঁড়া করে প্রস্তাবের মূল ব্যাপারটি বাদ দিয়ে এই দুর্বল অবস্থায় এনেছে। ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে সাধরণ ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী মনোভাব পোষন করে— তা এই প্রস্তাবটির মাধ্যমে প্রমাণিত।’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।

সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।

অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।

 

এমআইসি