ঢাকাঃ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আকস্মিক হামলায় অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইসরায়েল। শনিবার (৭ অক্টোবর) কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ইসরায়েলে ঢুকে পড়েন হামাসের প্রায় ১ হাজার সেনা। তারা ইসরায়েলে প্রবেশ করে সামরিক অবকাঠামোসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করেন। যা গত দুইদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনকে দ্বিখণ্ডিত করে জন্ম হয় ইসরায়েলের। এরপর গত ৭৫ বছরে কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে। হঠাৎ করে এত বড় আকারের হামলা দেখে— চমকে গেছে ইসরায়েলসহ বিশ্বের সব দেশ। কীভাবে এতটা সমন্বিত হয়ে ইসরায়েলের মতো সামরিক শক্তিধর দেশে হামাস হামলা চালালো, কারা তাদের সহায়তা করল— তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল হামাস ও লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রতিনিধিদের বরাতে জানিয়েছে, ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা শুরু হয় চলতি বছরের আগস্টে। আর এতে পুরোপুরি সহায়তা করেছে ইরান।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইসরায়েলে হামলা চালাতে আগস্ট থেকে হামাসের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেন ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের কর্মকর্তারা। তারা আকাশ, নৌ ও স্থলে একই সঙ্গে ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা সাজান।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, হামলা পরিকল্পনায় বেশ কয়েকবার পরিবর্তন আনা হয়। নতুন পরিকল্পনা সাজানো, পুরোনো পরিকল্পনা বাতিলসহ নানান বিষয়ে আলোচনা করে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিপ্লবী গার্ডের কর্মকর্তা এবং ইরান সমর্থিত চারটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা একাধিকবার বৈঠক করেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইরান এ হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছে এমন কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সঙ্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘ইরান এ হামলার নির্দেশ দিয়েছে অথবা এর পেছনে রয়েছে— এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমরা এখনো পাইনি। তবে এটি ঠিক— এর সঙ্গে ইরানের দীর্ঘ সূত্রতা আছে।’
তবে ইউরোপের এক কূটনৈতিক এবং সিরিয়ার সরকারের এক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ইসরায়েলে হামলার ক্ষেত্রে ইরান পুরোপুরি সহায়তা করেছে।
ইরানের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মাহমুদ মিরদাওঈ নামের হামাসের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা তারাই করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটি একটি ফিলিস্তিনি এবং হামাসের সিদ্ধান্ত ছিল।’
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এমআইসি