ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বানানোর অঙ্গীকার মোদির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ২৬, ২০২৩, ১১:৫০ পিএম
বুধবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সংস্কার করা প্রগতি ময়দানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ঢাকাঃ আগামী ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশে পরিণত করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লির সংস্কার করা প্রগতি ময়দানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ, ভারতের অবকাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে... বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলওয়ে সেতু ভারতে, সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত দীর্ঘতম টানেল ভারতে, বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটরযান চলাচলের সড়ক ভারতে, বৃহত্তম স্টেডিয়াম ভারতে, বৃহত্তম মূর্তি ভারতে... এসব কিছুই এখন ভারতে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও।

ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রথম মেয়াদে, ভারত অর্থনীতির দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষ ১০তম স্থানে ছিল। আমার দ্বিতীয় মেয়াদে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে ভারত। অগ্রগতির এই রেকর্ডের ভিত্তিতে আমি দেশকে বিশ্বের শীর্ষ তিন অর্থনীতির দেশে পরিণত করবো। এটা আমার বিশ্বাস। আর এটাই মোদির গ্যারান্টি।’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, গত ৬০ বছরে ভারতের সরকার মাত্র ২০ হাজার কিলোমিটার ইলেক্ট্রিক রেললাইন করতে পেরেছে। কিন্তু গত ৯ বছরে বিজেপি সরকার ৪০ হাজার কিলোমিটার করেছে। এখন প্রতি মাসে আমরা ৬ কিলোমিটার মেট্রো লাইনের কাজ, ৪ লাখ কিলোমিটার গ্রামের রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করছি।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে দিল্লি বিমানবন্দরের যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বার্ষিক প্রায় ৫ কোটি ছিল। এখন তা সাড়ে ৭ কোটি... বিমানবন্দরের সংখ্যা ১৫০টিতে পৌঁছেছে।

এদিকে, গত কয়েক মাস ধরে চলমান দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের সহিংসতা নিয়ে সংসদে অনাস্থা ভোটের মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদি। দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের আনা অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিরলা। তিনি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকদিনের মধ্যেই ভোটের তারিখ ঘোষণা করবেন তিনি।

বুধবার (২৬ জুলাই) কংগ্রেসের এক আইনপ্রণেতা এই অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব করেন। সরকারের পতন ঘটাতে এ ধরনের ভোট হয়ে থাকে। যেমনটা হয়েছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষেত্রে।

তবে ইমরানের মতো মোদির প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর কোনও শঙ্কা নেই। এছাড়া বড় কোনো সমস্যায়ও পড়বেন না তিনি। কারণ ৫৪৩ আসনের লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএর।

বিরোধী দল কংগ্রেসও জানিয়েছে, মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এ অনাস্থা ভোট প্রস্তাব করেনি তারা। মূলত মণিপুর ইস্যু নিয়ে যেন মোদি বিস্তারিত আলোচনা করেন সেজন্য এটির ব্যবহার করছেন তারা। অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ায় এখন মোদিকে নিজের সরকার নিয়ে বিস্তর আলোচনা করতে হবে। নিজের এবং সরকারে পক্ষে সাফাই গাইতে হবে।

গত জুনের প্রথম সপ্তাহে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ১৩০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু এ সহিংসতা নিয় মুখ খোলেননি মোদি। যদিও গত সপ্তাহে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে করে হাঁটানোর ঘটনা ভাইরাল হলে এ নিয়ে সংক্ষিপ্ত কথা বলতে বাধ্য হন তিনি।

২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মোদি এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো অনাস্থা ভোটের মুখে পড়লেন। ২০১৮ সালে তার সরকারের বিরুদ্ধে ভোটাভোটি হলেও সেটি বাতিল হয়ে যায়।

ভারতের আইন অনুযায়ী লোকসভায় যদি কোনো দল অনাস্থা ভোট আনতে চায়, তাহলে কমপক্ষে ৫০ জন আইনপ্রণেতাকে এই প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে হবে। যা কংগ্রেস খুব সহজেই পেয়ে গেছে।

সূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি।

 

এমআইসি