ঢাকাঃ সুদানের রাজধানীতে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ এবং নিয়মিত সেনাবাহিনীর মধ্যে এক দিনের প্রাণঘাতী যুদ্ধের পর রোববার ভোরে আবারও লড়াই শুরু হয়েছে। দুই বাহিনীর ক্ষমতার লড়াইয়ে মৃত বেড়ে ৫৬ জনে পৌঁছেছে।
দুই বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা চলার পর শনিবার হঠাৎ করে লড়াই শুরু হয়। এরপর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং খার্তুমের রাস্তা নির্জন হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আধাসামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবন, বিমানবন্দরসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের দখল নিয়েছে।
তবে সেনাবাহিনী এই দাবিগুলো অস্বীকার করেছে এবং শনিবারের শেষের দিকে এক বিবৃতিতে, সুদানী বিমান বাহিনী আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর ঘাঁটিগুলির বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়ার কারণে জনগণকে বাড়ির ভিতরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে থেকেই যুদ্ধবিমানকে আগে মাথার ওপর দিয়ে উড়তে দেখা গেছে। এএফপি সংবাদদাতাদের মতে, রোববার ভোরে বিস্ফোরণে খার্তুমের অনেক অংশে জানালা ভেঙে পড়ে এবং অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংগুলো কেঁপে ওঠে।
সৌদি আরবের পতাকাবাহী সংস্থা সৌদিয়া এয়ারলাইন্স বলেছে যে, খার্তুম বিমানবন্দরে যাত্রী, ক্রুসহ অপেক্ষা করা তাদের একটি বিমান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বিপণনে কাজ করা ২৪ বছর বয়সি বাকরি বলেছেন, 'খার্তুমের বাসিন্দারা এই অস্থিরতা কখনও দেখেননি। লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ফিরছিল। রাস্তাগুলো খুব দ্রুত খালি হয়ে গিয়েছিল।'
বিবিসির বেভারলি ওচিয়েং বলছেন, সুদানের সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে তীব্র ক্ষমতার দ্বন্দ্বই এ সংঘাতের কারণ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
দেশটিতে প্রস্তাবিত বেসামরিক সরকারে কে একীভূত সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করবেন - তা নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়েছে।
সুদানে একটি বেসামরিক সরকার পুনপ্রতিষ্ঠা করার জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে মতৈক্যে পৌঁছানোর এক চেষ্টা ব্যর্থ হয় - যার পেছনে আরএসএফের ১০০,০০০ সদস্যকে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার প্রশ্নটিও ছিল সমস্যার কারণ।
সামরিক বাহিনীর এ দুই অংশের মধ্যে সংঘাতের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার আরএসএফ উত্তরের মেরওয়ে শহরের একটি সামরিক ঘাঁটির কাছে তাদের সেনাদের মোতায়েন করে।
সুদানের নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান বলেছেন তিনি তার ডেপুটি এবং আরএসএফের অধিনায়ক মোহামেদ হামদান দাগালোর সাথে আলোচনা করতে ইচ্ছুক।
জেনারেল বুরহান ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুদানের বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হবার পর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক তোলপাড় চলছে।
বুইউ