জন্মদিনে ৮ চিতাবাঘ মুক্ত করলেন নরেন্দ্র মোদী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২, ০২:০৪ পিএম

ঢাকাঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের জন্মদিনে আট চিতা বাঘ খাঁচামুক্ত করেছেন। এর আগে বাঘগুলোকে নামিবিয়া থেকে বিমানবাহিনীর কার্গো প্লেনে করে ভারতে নিয়ে আসা হয়। এরপর মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় অভয়ারণ্যে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চিতাগুলোকে নরেন্দ্র মোদী খাঁচামুক্ত করেন।

১৯৫২ সালে ভারত থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল চিতা। এর ৭০ বছর পর ফের একবার ভারতের মাটিতে পা রাখল চিতা। কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতাগুলিকে রাখার জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

শনিবার নরেন্দ্র মোদীর ৭২ তম জন্মদিন। নামিবিয়ার চিতাগুলিকে খাঁচামুক্ত করা প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদ্যাপনের অংশ হিসেবে দেখছেন অনেকে।

নামিবিয়া থেকে চিতাদের নিয়ে বিশেষ প্লেন বি-৭৪৭ জাম্বো জেট রওনা দিয়েছিল শুক্রবারই। সেদিন সারারাত আকাশে উড়তে উড়তে সকালে দিল্লি হয়ে গোয়ালিওরের মাটিতে নামে। এগুলোকে আনা হয় বিশেষ সুরক্ষার সঙ্গে। প্লেন থেকে ৮টি চিতাকে নামিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কুনো জাতীয় উদ্যানে। এরপর স্থানীয় সময় বেলা ১১টা নাগাদ মধ্যপ্রদেশের সেই অরণ্যে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদী।

প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একটি যন্ত্রের হাতল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চিতার খাঁচার দরজা খুলছেন প্রধানমন্ত্রী। ধীরে ধীরে খুলে যাওয়া দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে চিতাগুলো। তারপর মোদী ক্যামেরা দিয়ে এগুলোর ছবি তুলেছেন। ভিডিওতে মোদীকে হাততালি দিতেও দেখা গিয়েছে।

তাছাড়া চিতার মতো বন্যপ্রাণীকে ভারতে ফেরানোর জন্য নামিবিয়াকে ‘বন্ধু দেশ’ বলে উল্লেখ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার বক্তব্য, চিতা শুধু প্রকৃতিরই বাসিন্দা নয়, ভারতের ঐতিহ্য-পরম্পরার সঙ্গে বহু মিল এই বন্যপ্রাণীর। চিতা স্বাধীনচেতার প্রতীক। আর তাই স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে চিতাদের ফিরে আসা অন্য মাহাত্ম্য বহন করে। এই আট চিতাই দেশের প্রকৃতি, অরণ্যাঞ্চলে আমুল বদল আনবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

চিতাগুলোর গলায় রেডিয়ো কলার পরানো হয়েছে এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তাদের জিপিএস অবস্থান দেখা যাবে।

ভারত সরকারের 'প্রজেক্ট চিতা'র আওতায় এসব চিতা আনা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়া থেকে আগামী পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে ৫০টি চিতা আনবে দেশটি।

গত ২০ জুলাই ভারত ও নাম্বিয়া এই চিতা নিয়ে আসার ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৪০ সাল পর্যন্ত মধ্যভারতে চিতার দেখা মিলত। পরবর্তী সময়ে ব্যাপক শিকারের জেরে তা ভারত থেকে অবলুপ্ত হয়ে যায়। চিতাকে ১৯৫২ সালে দেশে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। ছত্তিশগড়ের সুরগুজা স্টেটের রাজা মহারাজা রামানুজ প্রতাপ সিং দেও দেশে থাকা শেষ কয়েকটি চিতাকে মেরেছিলেন বলে জানা যায়।

কুনো জাতীয় উদ্যানের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ঘাসজমি, ছোট ছোট টিলা। চিতাদের জন্য এটি আদর্শ স্থান। তবে প্রথমেই সরাসরি জঙ্গলে ছাড়া হবে না নামিবিয়ার আটটি চিতাকে। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে জালে ঘেরা মুক্ত জায়গায় রাখা হবে তাদের। ২৪ ঘণ্টা তাদের নজরদারির জন্য একটি দল থাকবে।

এমএম