হিজাব পরায় পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়া হলো না দুই শিক্ষার্থীকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ২২, ২০২২, ০৩:০৮ পিএম

ঢাকাঃ ভারতে হিজাব নিয়ে বিতর্কের রেশ যেন থামছেই না। হিজাবের পক্ষে আদালতে পিটিশন দাখিল করা কর্ণাটকের দুই ছাত্রী এবার হিজাব পরে আসায় কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। হলেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাদের।

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) কর্ণাটক বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার আগেই রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনো পরীক্ষার্থী হিজাব পরে এলে তাকে হলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সব শিক্ষার্থীকে পোশাকবিধি মেনেই পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হবে। অনেক মুসলিম ছাত্রী পরে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

এরপরও আলিয়া আসাদি এবং রেশম নামের ওই দুই ছাত্রী হিজাব পরে পরীক্ষা দিতে যান। তারা হিজাবপন্থী আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ বলে জানা গেছে।

তারা আজ পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হলে পর্যবেক্ষকরা জানান, পোশাকবিধি না মানলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট ওই দুই পরীক্ষার্থী কর্তৃপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতেও মন গলেনি। শেষ পর্যন্ত নীরবে পরীক্ষাকেন্দ্র ত্যাগ করে ফিরে যান তারা।

কর্ণাটকের প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ডের অধীনে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা শুরু হয়েছে এবং চলবে ১৮ মে পর্যন্ত। পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে এক হাজার ৭৬টি কেন্দ্রের কোথাও যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে তার জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে রাজ্য শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ জানিয়েছেন, হিজাব পরা কোনো শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে না।

হিজাবের পক্ষে আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনারদের একজন ১৭ বছর বয়সী আলিয়া আসাদি। গত সপ্তাহে রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের কাছে আবেদন জানিয়ে এই ছাত্রী বলেন, আমাদের ভবিষ্য নষ্ট হওয়া বন্ধ করার একটা সুযোগ মুখ্যমন্ত্রীর সামনে এখনো আছে।

রাজ্য পর্যায়ের কারাটে চ্যাম্পিয়ন আলিয়া তার আবেদনে আরও জানান, প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক বহু শিক্ষার্থী শুধু হিজাব নিষিদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাই তাদের হিজাব পরেই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

হিজাব পরা বাধ্যতামূলক কোনো ধর্মীয় অনুশীলন নয়। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর গত ১৫ মার্চ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের উচ্চ আদালত এ রায় দেন।

এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি, হাইকোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েকজন আন্দোলনকারী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করতে অসম্মত হয়। জানানো হয় হাইকোর্টে মামলা চলছে। এ অবস্থায় তাতে হস্তক্ষেপের কোনো প্রয়োজন নেই।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি, অন্তর্বর্তী রায়ে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, যতদিন না পর্যন্ত চূড়ান্ত রায় দেওয়া হচ্ছে, ততদিন শিক্ষার্থীরা গেরুয়া উত্তরীয়, হিজাব পরে এবং ধর্মীয় পতাকা বা ওই জাতীয় কিছু নিয়ে ক্লাসরুমে প্রবেশ করতে পারবে না।

এমএম