ঢাকাঃ ব্রাজিলে প্রবল বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকাজ এখনো চলায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের গভর্নর ক্লদিও কাস্ত্রো। তার কথায়, অবস্থা অনেকটা যুদ্ধের মতো.. গাড়ি গাছে ঝুলছে, উল্টে গেছে, প্রচুর কাদা-পানি চারপাশে।
দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির রিও ডি জেনেরিও প্রদেশের পার্বত্য শহর পেট্রোপলিসে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মুষলধারে বর্ষণের কারণে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দেয়। এতে বহু বাড়ি-ঘরও ধ্বংস হয়েছে।
এদিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পেট্রোপলিস শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন শহরের মেয়র। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, রিও ডি জেনেরিও থেকে ৬৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত পেট্রোপলিস শহরে প্রবল বৃষ্টি আঘাত হানার ফলে রাস্তাগুলো যেন নদীতে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাড়িগুলো ধ্বংস হয়েছে এবং বহু গাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় ৮০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
ব্রাজিলের ন্যাশনাল সিভিল ডিফেন্স দফতর টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া আরও ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
ওয়েনডেল পিও লৌরেনকো নামে পেট্রোপলিস শহরের এক ২৪ বছর বয়সী বাসিন্দা বার্তাসংস্থা এএফপি’কে বলেন, কাদা-মাটির নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারানো একটি মেয়েকে আমি খুঁজে পেয়েছি। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে স্থানীয় গির্জার দিকে যাওয়ার সময় তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এটি একটি রণাঙ্গন এবং সবাই সেটিই বলছে।
রিও ডি জেনেরিওর অগ্নি নির্বাপক দফতর জানিয়েছে, ১৮০ জনেরও বেশি দমকলকর্মী, সেনাসদস্য এবং অন্যান্য উদ্ধারকর্মী জীবিতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে কাদায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া ভিডিওতে শহরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং রাস্তায় গাড়ি ভাসতে দেখা যাচ্ছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো এক টুইটবার্তায় পেট্রোপলিসের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
হতাহতদের স্মরণে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছে পেট্রোপোলিস শহর কর্তৃপক্ষ।
আগামীনিউজ/এমবুইউ