ঢাকাঃ প্রায় তিন বছর পর ফের সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত কুর্দি-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) চলমান সংঘর্ষে অন্তত ১২০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হাসাকেহ শহরে একটি কারাগারে আইএস সদস্যদের হামলার পর সংঘর্ষে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
রোববার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী, কারাগারের নিরাপত্তা রক্ষী এবং সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীর সদস্যসহ আইএসের ৭৭ সদস্য এবং ৩৯ কুর্দি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার আইএসের গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কারাগারে হামলার দায় স্বীকার করেছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। শনিবার আইএসের প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, সিরিয়ার হাসাকেহ জেলার ঘোয়ারান কারাগারে আইএসের সশস্ত্র সদস্যরা প্রবেশ করছেন।
কুর্দি-পরিচালিত ওই কারাগারের প্রবেশের পর আইএসের সদস্যরা তাদের পতাকা উত্তোলন করেন। তবে এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। এসওএইচআর বলছে, কারাগারে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭ বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন।
রোববার কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিএফ) বলছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন সৈন্যদের সহায়তায় কারাগারে তাদের অবস্থান দৃঢ় করা হয়েছে। সংঘর্ষে এসডিএফের ১৭ সৈন্য নিহত হয়েছেন।
এর আগে, প্রাথমিকভাবে এসডিএফ কারাগারের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করে। এছাড়া কারাগারের আশপাশে আশ্রয় নেওয়া আইএসের ৮৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় এসডিএফ। পরবর্তীতে কারাগারের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ আইএসের হাতে চলে গেছে স্বীকার করে সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স।
এসডিএফের একজন মুখপাত্র বলেছেন, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ১০৪ বন্দিকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কারাগার থেকে ঠিক কতজন বন্দি পালিয়ে গেছেন, সে ব্যাপারে সঠিক কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, আইএসের সশস্ত্র জঙ্গিরা ঘোয়ারান কারাগারের ফটকের কাছে একটি গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এতে কারাগারের কয়েক ডজন বন্দি পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।
শুক্রবার এসডিএফের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার মাজলুম আবাদি বলেন, কারাগার ভেঙে বন্দিদের মুক্ত করতে আইএস তাদের ‘বেশিরভাগ স্লিপার সেল’কে সংঘবদ্ধ করেছে।
এদিকে, কারাগার থেকে দেশের অন্যান্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া সংঘাতের অবসানে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন বাহিনী আইএসের অবস্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন।
আগামীনিউজ/নাসির