ঢাকাঃ হাইতির স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত শনিবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর গোনাইভসের এক চার্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে।
অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, তীব্র গুলির মধ্যে দ্রুত গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।
এর আগে গত জুলাই মাসে নিজের বাসভবনে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন হাইতির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েস। এরপর থেকে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে।
হাইতির প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, অস্ত্রধারী ‘ডাকাত ও সন্ত্রাসীরা’ প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরিকে হত্যাচেষ্টার পেছনে রয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে আটকাদেশ জারি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি দেশটির ক্ষমতাধর অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান জোরালো করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এসব চক্র অপহরণ এবং দেশের গ্যাস বিতরণের বড় অংশ দখল করে নেওয়ার পর এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। গ্যাস বিতরণের বড় অংশ দখল হয়ে যাওয়ায় হাইতিতে দেখা দেয় তীব্র জ্বালানি সংকট।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, এরিয়েল হেনরিকে হত্যাচেষ্টার নেপথ্যে রয়েছে ‘দস্যু ও সন্ত্রাসীরা’। সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, হামলাকারীরা বহরের ওপর হামলা চালাতে দেয়ালের পিছনে লুকিয়ে ছিল। তারা চার্চ ঘিরে ফেলে বিশপকে হুমকি দেয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র ব্যক্তিদের মধ্যে গুলি বিনিময়ে এক জন নিহত এবং অপর দুইজন আহত হয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট জোভেনেই মোইসি খুন হওয়ার দুই সপ্তাহ পর হাইতির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধান হন এরিয়েল হেনরি। তার নেতৃত্বাধীন ভঙ্গুর প্রশাসনের জন্য এই হত্যাচেষ্টা আরেকটি বড় ধরণের বিপর্যয়।
উল্লেখ্য, ১৮০৪ সালে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের প্রথম স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয় হাইতি। দেশটি প্রথমে স্পেনীয় ও পরে ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। ফরাসি ঔপনিবেশিকদের উৎখাত করে বিশ্বে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্বাধীন সরকার গঠিত হয় দেশটিতে।
স্বাধীন হলেও বিগত দুই শতাব্দী ধরে দেশটি একের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, আগ্রাসন আর দমনপীড়নের মধ্য দিয়ে গেছে। এর মধ্যে পরিবারতান্ত্রিক দুভেলিয়ারদের স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্বাবাদী শাসনের শিকারও হয়েছে দেশটির মানুষ।
আগামীনিউজ/বুরহান