ঢাকাঃ আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশের সেলুন গুলোতে দাড়ি কামানো বা ছেঁটে ফেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালেবান। দাড়ি কামানো ইসলামী আইনের লঙ্ঘন, তাই এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা ।
দক্ষিণ হেলমান্দ প্রদেশের সেলুন গুলোতে পোস্ট করা বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, তালেবান কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে চুল এবং দাড়ি কাটায় অবশ্যই শরিয়া আইন মেনে চলতে হবে।
হেলমান্দ প্রদেশেই শুধু নয়, একই নির্দেশ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন রাজধানী কাবুলের অনেক সেলুন মালিক। তারা বলছেন, এই নির্দেশ না মানলে তালেবানের বিধান অনুযায়ী শাস্তিও পেতে হবে তাদের। এর বিরুদ্ধে যাওয়ার অধিকার নেই কারোই।
কাবুলের এক নাপিত বিবিসি কে জানিয়েছেন, তালেবান যোদ্ধারা তাদের বলেছে যে লুকিয়ে দাড়ি কাটা হয় কিনা তা জানার জন্য ছদ্মবেশে পাহারা দিবে তারা।
কাবুল শহরে জনপ্রিয় একটি সেলুনের পরিচালক জানান, সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন তাকে ফোন করেছিলেন এবং বলেছিলেন “আমেরিকান স্টাইল বন্ধ করুন এবং দাড়ি ছাঁটা বন্ধ করুন।“
তালেবানের এই নতুন নির্দেশে চিন্তায় পড়েছেন দেশটির সেলুন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন এই অবস্থা চলতে থাকলে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
আরেক সেলুন মালিক বিবিসিকে জানায়, প্রায় ১৫ বছর ধরে হেয়ারড্রেসারের কাজ করছেন তিনি। কিন্তু এখন দীর্ঘদিনের এই ব্যবসা বন্ধের পথে।
এদিকে হেরাতের আরেক নাপিত জানান, চুল-দাড়ি কাটা বন্ধের নির্দেশ পাননি তিনি। কিন্তু তারপরেও তার ব্যবসা বন্ধের পথে। কারণ তালেবান যোদ্ধাদের ভয়ে তার দোকানে আসছেন না কোনও গ্রাহক।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রথম ক্ষমতায় থাকাকালীন তালেবানের কট্টর ইসলামপন্থীরা চুলের স্টাইল নিষিদ্ধ করেছিল এবং পুরুষদের দাড়ি বড় করতে জোর দিয়েছিল।
কিন্তু এরপর গেল ২০ বছরে ক্ষমতার পালাবদলে চিত্র অনেকটাই পাল্টে গিয়েছিল। ক্লিন শেভ এবং ফেশনেবল চুলের কাট অনেকটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
এদিকে এর আগে শনিবার অভিযুক্ত চার অপহরণকারীকে গুলি করে হত্যা করে, প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখে তালেবান, যাতে অন্যরা এ থেকে শিক্ষা নেয়।
তাদের ধরনের কার্যকলাপেই ধারণা করা যায় যে, একটি অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হবে না। তারা আবার আগের মেয়াদের কঠোর বিধিবিধানের দিকেই ফিরে যাবে। সূত্র: বিবিসি