ঢাকাঃ আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের পর বিলুপ্ত হওয়া ‘পুণ্যের প্রচার ও অপকর্ম প্রতিরোধ’ মন্ত্রণালয় তালেবান শাসনের সঙ্গে আবার ফিরে এসেছে। তালেবানের কট্টর শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব এ মন্ত্রণালয়ের হাতেই ছিল। মন্ত্রণালয়টি পুরুষ সঙ্গী ছাড়া নারীদের বাইরে বের হওয়া এবং গানবাজনাসহ যেকোনও ধরনের বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছিল।
সম্প্রতি এক তালেবান নেতা মোল্লা নুরউদ্দিন তুরাবি জানিয়েছেন, স্বল্প অপরাধের সেই শাস্তি এই দ্বিতীয়বারের তথাকথিত ‘আধুনিক’ তালেবানি শাসনেও বজায় থাকবে। কারণ অপরাধীদের ‘‘হাত-পা কেটে নেয়া দেশের নিরাপত্তার জন্যই জরুরি’’ বলে মনে করেন তালেবানের অন্যতম এই প্রতিষ্ঠাতা।
তালেবানি শাসনের প্রথম আমলে তিনি ছিলেন আফগানিস্তানের আইনমন্ত্রী। কারাগারের ভারপ্রাপ্তও। ইসলামিক আইন কীভাবে বলবৎ করা হবে বা তা ঠিকঠাক বলবৎ হচ্ছে কি না, সেটা নুরই দেখাশোনা করতেন। দ্বিতীয় তালেবানি শাসনেও তার হাতে একই দায়িত্ব বর্তাবে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
তবে প্রাক্তন তালেবান আইনমন্ত্রী নিজেই আগ বাড়িয়ে তালেবানের নতুন আইন নিয়ে কিছু বিবৃতি দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নুর যা বলেছেন, তার মোট কথা হলো- কোন দেশে কে কী শাস্তি পাচ্ছে, তা নিয়ে তালেবান তো আর কথা বলতে যায় না। তা হলে দেশের মানুষকে তারা কী শাস্তি দেবে, তা নিয়ে অন্য দেশের কথা তালেবান শুনতে যাবে কেন!
বৃহস্পতিবার দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে নুর বলেন, ‘‘আমাদের আইন আমরা কীভাবে বলবৎ করব, তা অন্য কেউ বলে দেবে না। আমরা আমাদের আইন নিজেরা তৈরি করব। ইসলামকে অনুসরণ করে আর কোরআনের উপর ভিত্তি করেই তৈরি করব।’’
নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানের তালেবান শাসনের প্রথম আমলে কঠিন আর নৃশংস আইন বলবৎ করার জন্য কুখ্যাত ছিলেন নুরউদ্দিন। সে সময় আফগানিস্তানে খুনের অপরাধীদের সবার সামনে গুলি করে হত্যা করা হত। হত্যা করতেন নিহত বা নিগৃহীতের পরিবারের মানুষ। সবার সামনেই দোষীদের হাত-পাও কেটে নেয়া হত। বড় খেলার মাঠ বা স্টেডিয়ামের মধ্যে দেয়া হত সেই শাস্তি।
নুরউদ্দিন অবশ্য আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, ‘‘এ বার হাত-পা কাটা হলেও তা জনসমক্ষে হবে না।’’
চলতি বছরের অগস্টে আফগানিস্তানের শাসনভার হাতে নেয়া তালেবান এবার নিজেদের ‘উদারপন্থী’ শাসক বলে দাবি করছে। তবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মত, পদে পদে নিজেদের দাবি নিজেরাই খণ্ডন করে চলেছে তালেবান।