ঢাকাঃ ভারতের সঙ্গে করোনা টিকার চুক্তি নিয়ে প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসায় বিরোধীদলীয় সিনেটর র্যান্ডলফে রদ্রিগেজ তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গত সোমবার বলসোনারোর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অপরাধ মামলা দায়ের করেন তিনি।
‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিশাল একটি দুর্নীতি হচ্ছে জানার পরেও বলসোনারো কেন কোনো পদক্ষেপ নেননি’- তা জানতে চেয়ে আদালতকে তদন্ত করতে বলেছেন রদ্রিগেজ।
এদিকে ভারতের সঙ্গে ৩২৪ মিলিয়ন ডলারের করোনার টিকা কেনার চুক্তি স্থগিত করেছে ব্রাজিল। চুক্তি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গত মঙ্গলবার জানান দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ফেডারেল হিসাবাধ্যক্ষ, সিজিইউয়ের বিধিমালা মোতাবেকই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী ভারত বায়োটেকের কাছ থেকে কোভ্যাক্সিন এর ২০ মিলিয়ন ডোজ কেনার কথা ছিল ব্রাজিলের। কিন্তু চুক্তি সম্পর্কিত অনিয়মের অভিযোগে জনরোষে পড়ায় এই চুক্তিই শেষ পর্যন্ত বলসোনারোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, তিনি এ বিষয়ে আগেই প্রেসিডেন্টকে সাবধান করেছিলেন।
ব্রাজিলে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়ানোর পাশপাশি প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর জনপ্রিয়তার পারদও তরতর করে নিচে নেমে গেছে। কিন্তু সোমবার প্রেসিডেন্ট তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি এসব অনিয়ম সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।
কিন্তু এত সহজেই সন্দেহের তীর সরে যাচ্ছে না বলসোনারোর কাছ থেকে। তাই আগামী প্রেসিডেন্সিয়াল ভোটে বলসোনারোর জন্য সমস্যা ডেকে আনতে পারে এই ইস্যু।
দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্সেলো কুইরোগা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্থগিতাদেশের সময় তার দল এই ব্যাপারে তদন্ত করছে। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ে জানায়, 'সিজিইউ এর প্রাথমিক বিশ্লেষণের পরিপ্রেক্ষিতে এই চুক্তি নিয়ে কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু এ ব্যাপারে আরও বিশদ পর্যবেক্ষণ করার জন্য চুক্তি স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।'
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে বলে এর আগে রিপোর্ট করেছিল সিএনএন ব্রাজিল।
প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের উচ্চমূল্য (১৫ ডলার) ধরার কারণ, চুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে রাজি করানো এবং অমীমাংসীত নিয়ন্ত্রক অনুমোদনসমূহ ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরে একটি তদন্ত শুরু করেছে ব্রাজিলীয় ফেডারেল প্রসিকিউটরেরা।