ঢাকাঃ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনেওয়ালা জানিয়েছেন, নভেল করোনাভাইরাসের টিকা পেতে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল থেকে ফোনে ‘হুমকি’ দেওয়া হচ্ছে ।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীসহ অন্যরা জরুরি ভিত্তিতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ টিকা পেতে এই চাপ দিচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব অভিযোগ করেন পুনেওয়ালা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
ফোনকলের কথা উল্লেখ করে পুনেওয়ালা সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হুমকি বললেও কম বলা হয়। তাঁদের দাবি ও আগ্রাসী বক্তব্য চমকে দেওয়া মতো। সবাই মনে করছেন তাঁদের টিকা পাওয়া উচিত। তাঁরা বুঝতে চাইছেন না যে, অন্যদেরও তাঁদের আগে টিকা পাওয়া উচিত।’
সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত কোভিশিল্ড বর্তমানে ভারতে গণহারে ব্যবহৃত দুটি টিকার মধ্যে একটি।
ফোনকলের ব্যাপারে সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আরও বলেন, ‘তাঁরা বলছেন, আপনি যদি টিকা না দেন, তাহলে ফল ভালো হবে না। তাঁরা খারাপ ভাষা ব্যবহার না করলেও বলার ভঙ্গি এমন ছিল। তাঁদের কথা না শুনলে তাঁরা কী করতে পারেন—সেটাই তাঁরা বোঝাতে চাচ্ছিলেন। এমন হুমকি আসছেই এবং তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত কোনো কাজ করতে দিচ্ছেন না।’
আদর পুনেওয়ালা বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে রয়েছেন। যুক্তরাজ্যে ভারতীয় নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগেই পুনেওয়ালা যুক্তরাজ্যে যান।
এমন পরিস্থিতিতে এখনই ভারতে ফিরতে চান না পুনেওয়ালা। তিনি যুক্তরাজ্যে আরও কিছুদিন থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সবকিছু আমার কাঁধে এসে পড়েছে। কিন্তু, আমার একার পক্ষে সব করা সম্ভব না। আমি এমন পরিস্থিতিতে থাকতে চাই না যেখানে আপনি কেবল নিজের কাজটি করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া আপনি এক্স, ওয়াই, জেডের দাবি অনুযায়ী (টিকা) সরবরাহ করতে পারছেন না বলে অনুমান করতে চান না যে তারা কী করতে পারে।’
পুনেওয়ালা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারত ছাড়াও অন্য দেশে টিকা উৎপাদন সম্প্রসারণবিষয়ক ব্যবসায়িক পরিকল্পনার জন্যেও তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। এ ব্যাপারে আগামী কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে পুনেওয়ালা গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে এক টুইটবার্তায় লেখেন, ‘যুক্তরাজ্যে আমাদের সব সহযোগী ও অংশীজনদের সঙ্গে একটি দুর্দান্ত বৈঠক হয়েছে। বলতে পেরে ভালো লাগছে যে ভারতের পুনেতে কোভিশিল্ডের উৎপাদন পুরোদমে চলছে। কিছুদিনের মধ্যে ফিরে গিয়ে পর্যালোচনার প্রত্যাশায় রয়েছি।’
আগামীনিউজ/সোহেল