যুক্তরাজ্যে বিস্ফোরণের ৪৬ বছর পর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

নভেম্বর ১৯, ২০২০, ০৭:০৪ পিএম

ঢাকাঃ এক আধ দিন, মাস বা বছর নয়, ৪৬ বছর পর যুক্তরাজ্যে একটি বিস্ফোরণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ।

কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্ত করে অভিযুক্তকে ধরতে কতদিন সময় লাগতে পারে? কয়েক দিন বা কয়েক মাস, নিদেনপক্ষে কয়েক বছর। কিন্তু তাই বলে সাড়ে চার দশকের বেশি সময় লাগবে? যুক্তরাজ্যে তাই লেগেছে।

বার্মিংহামে বিস্ফোরণ হয়েছিল ৪৬ বছর আগে, ১৯৭৪ সালে। উত্তর আয়ারল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসনের প্রতিবাদে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের পুলিশ ও সন্ত্রাসবিরোধী শাখার কর্মকর্তারা সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেলফাস্ট থেকে একজন ৬৫ বছর বয়স্ককে ধরেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ওই ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বার্মিংহামের ঘটনার জন্য তিনিই দায়ী। উত্তর আয়ারল্যান্ডের একটি থানায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বার্মিংহামের ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে ২১ জন মারা গেছিলেন। আহত হয়েছিলেন ১৮২ জন। আইরিশ জাতীয়তাবাদীরা তখন উত্তর আয়ারল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসনের প্রতিবাদে রক্তাক্ত সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন। ওই বিস্ফোরণ ব্রিটেনের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় বিস্ফোরণের ঘটনার মধ্যে একটি।

Großbritannien Birmingham | Freigesprochene Mitglieder der Birmingham Six
যে ছয় জনকে ভুল করে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল

১৯৭৪ সালে ২১ নভেম্বর বার্মিংহামে জোড়া বিস্ফোরণ হয়। অভিযোগ, ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি(আইআরএ)। এই আক্রমণের জন্য ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের জেলে পাঠানো হয়।

১৯৭৫ থেকে ৯১ পর্যন্ত তাঁরা জেলে থাকেন। পরে আদালতের রায়ে তাঁরা মুক্তি পান। কারণ, তাঁরা ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।

তারপর আর কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আইআরএ এই ঘটনার কোনো দায় স্বীকার করেনি। ৪৬ বছর পর আবার একজনকে ধরল পুলিশ।

তিন দশকের রক্তাক্ত সংঘর্ষ

১৯৭০ সালে আইআরএ মূলত ব্রিটিশ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মীদের গুলি করে বা বিস্ফোরণের মাধ্যমে হত্যা করার ডাক দেয়।

তাদের আক্রমণে প্রচুর সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হয়। আইআরএ হানায় বা ব্রিটিশ আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে উত্তর আয়ারল্যান্ডে সাড়ে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

১৯৯৮ সালে গুড ফ্রাইডে চুক্তির পর সহিংসতা থামে। ক্যাথলিক রিপাবলিকানরা দুই আয়ারল্যান্ডের সংযুক্তি চাইছিলেন। আর সংখ্যাগুরু প্রটেস্ট্যান্টরা সংযুক্তি চেয়েও ব্রিটিশদের অধীনে থাকার পক্ষে ছিলেন। যুক্তরাজ্য এখনো স্বাধীনতাপন্থী জঙ্গি সংগঠনগুলির উপর নজরদারি রাখে।

আগামীনিউজ/প্রভাত