ঢাকাঃ ভারত ও চীনের মধ্যে লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে অবশেষে স্বস্তি মিলল। গত মাসে রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়া এ এলাকা নিয়ে দুই পক্ষের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের এক মুখপাত্র। মঙ্গলবার কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকেই এ সফলতা এসেছে বলে জানিয়েছে দেশটি।
এ আলোচনার ভিত্তিতেই অদূরভবিষ্যতে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে মন্তব্য করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর আলজাজিরার।
এদিন দু’দেশের কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক প্রায় ১৫ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আলোচনার ভিত্তিতেই পুরো অঞ্চলে আপাতত একটি স্থিতাবস্থা ফিরল। এবার এই শান্তি পরিস্থিতি বজায় রাখতে একত্রে কাজ করতে হবে দু’দেশকেই।
এ ব্যাপারে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়েং বলেন, ‘১৪ জুলাইয়ের বৈঠকটি ছিল চতুর্থ দফা। আমাদের মধ্যে বিশ্বস্ততা বেড়েছে। এবার আমরা উত্তেজনা প্রশমন ও সেনা প্রত্যাহার নিয়ে কাজ করব।’
লাদাখের রাজধানী লেহতে অবস্থিতি ১৪ কর্পসের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং ভারতকে নেতৃত্ব দেন এ আলোচনায়। আর সাউথ মিয়ানমার মিলিটারি রিজিয়নের কমান্ডার মেজর জেনারেল লেউ লিন ছিলেন চীনের নেতৃত্বে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বৈঠকের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বলেছিলেন, সীমান্তের বিতর্কিত অঞ্চল থেকে ভারত ও চীনের সেনারা সরে যাচ্ছে। একে একটি বিরাট অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
জয়শঙ্কর বলেছিলেন, উভয় দেশের সেনারা যেহেতু খুব কাছেই অবস্থান করে এজন্য সংঘাতে না জড়ানোর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সম্মতি হয়েছে দু’দেশ।
এদিকে, করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ফিরেছে চীন। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই দেশটিতে ভয়াবহ বিপর্যয় শুরু হয়। অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধস নেমে আসে।
কিন্তু গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় চীন করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে সক্ষম হয়েছে। অর্থনীতিও চাঙ্গা হতে শুরু করে।
বিবিসি জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনীতির এ দেশটিতে চলতি বছরের প্রথম তিন মাস অর্থনীতি নিম্নমুখী ছিল। করোনার কারণে দীর্ঘদিন লকডাউন চলায় এর প্রভাব পড়েছিল দেশটির অর্থনীতিতে।
তবে এপ্রিল থেকে জুন মাসে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। বিশেষজ্ঞরা যা ধারণা করেছিলেন তার চেয়েও চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও ভালো হতে শুরু করেছে।
করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় বাধ্য হয়েই কড়াকড়ি আরোপ করেছিল চীন। ফলে বেশ কয়েক মাস ধরে দেশটির বিভিন্ন ফ্যাক্টরি এবং ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। তবে করোনার প্রকোপ যখন কমতে শুরু করল তখন দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে ধীরে ধীরে দেশজুড়ে কড়াকড়ি শিথিল করা হয়।
এমনকি সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ট্যাক্স নেয়াও বন্ধ রেখেছে। লকডাউন শেষে চীনের অর্থনীতি নিয়ে যতটা ভাবা হয়েছিল তার চেয়েও দেশটির অর্থনীতি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তবে দেশটির খুচরা বাজারের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম অগ্রগতি হয়েছে।
চীনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৬১২ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৪ হাজার ৬৪৩ জন। দেশটিতে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন ৭৮ হাজার ৭১৯ জন।
আগামীনিউজ/আশা