ঢাকাঃ গতকাল (০৭ সেপ্টেম্বর) চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের মধ্যে এই ১২ বছরের বালিকাকে মাটিতে চেপে ধরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে সেখানকার পুলিশ। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর এই সমালোচনা শুরু হয়েছে।
হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এইচকেইউএসটি) শিক্ষার্থীদের গণমাধ্যম গ্রুপ ভিডিওটি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভের সময় রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মেয়েটি। এ সময় দাঙ্গা পুলিশের সদস্যরা তাকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
পরে মেয়েটি সেখান থেকে দৌড়ে যাওয়ার সময় সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা তাকে ধাওয়া করে। এর এক পর্যায়ের মেয়েটিকে মাটিতে ফেলে আটক করে পুলিশ। এ সময় আশপাশের জনতা মেয়েটির চিৎকারের শব্দ শুনতে পায়।
হংকংয়ের সরকারি রেডিও আরটিএইচকের একটি শোতে অংশ নিয়ে মেয়েটির মা হো বলেন, স্কুলের প্রয়োজনীয় রং তুলি কেনার জন্য নিজের ভাইয়ের সঙ্গে বাইরে গিয়েছিল তার মেয়ে। এ সময় পুলিশ আচমকা তাদের ধাওয়া করে।
তবে হংকং পুলিশ ওই মেয়েটিকে ধাওয়া করে ধরার বিষয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, ঐ পরিস্থিতিতে পুলিশের সদস্যরা প্রয়োজনীয় হালকা বলপ্রয়োগ করেছিল। মেয়েটিসহ বিক্ষোভকারীরা সেখানে তল্লাশি অভিযানে বাধা দেয়ায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার মাঝে সে হঠাৎ সন্দেহজনকভাবে দৌড় দিয়েছিল। সেজন্য কর্মকর্তারা তাকে ধাওয়া করে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগ করে আটক করেছিল।
পুলিশ বলছে, মেয়েটি শহরে দুই জনের বেশি মানুষের জমায়েতে সরকারি যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা লঙ্ঘন করেছে। এ জন্য তাকে ২ হাজার হংকং ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পুলিশের অভিযানের বিষয়ে মতামত দেয়াটা প্রধান নির্বাহীর জন্য ঠিক হবে না। তবে ভিডিও ক্লিপটি মূল্যায়নের জন্য জনসাধারণকে প্রকৃত পরিস্থিতি দেখে নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত জুনে বিশেষ এই প্রশাসনিক অঞ্চলে চীন জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারির পর থেকে গণতন্ত্রপন্থীরা বিক্ষোভ করে আসছেন। রোববারের বিক্ষোভ থেকে অন্তত ৩০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হংকংয়ের রোববার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সূচি নির্ধারিত ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারিতে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় গত জুলাই মাসে এই নির্বাচন আগামী এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়।
কিন্তু হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থীদের অনেকেই এই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যাওয়ার শঙ্কায় সরকার নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
আগামীনিউজ/ড্যানি