ঢাকা : রাশিয়া করোনা ভাইরাসের প্রথম টিকা তৈরী করে আনুমোদন দেয়ার পরই ভ্যাকসিনের মান নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। মানবদেহে প্রয়োগের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে রাশিয়া এটি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করায়, বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষ ধোঁয়াশার মধ্যে পড়েছেন।
ভ্যাকসিন নিয়ে সতর্ক করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, ট্রায়ালের সম্পূর্ণ তথ্য ছাড়াই ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতার ব্যাপারটি বিশ্বাস করা কঠিন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগের ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. অ্যান্তনি ফাউচি এবিসি নিউজের দেবোরাহ রবার্টসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রাশিয়া-অনুমোদিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি কতখানি নিরাপদ বা এর কার্যকারিতা কেমন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
মানবদেহে এ প্রতিষেধক প্রয়োগের খবরে মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যালেক্স আজার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ভ্যাকসিন প্রথম তৈরী করাটাই মূখ্য নয়, বরং ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর হওয়াটাই প্রধান বিষয়।
বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া করোনায় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ লাখ ৫ হাজার ৬৫৫ জন এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৪৯ জন।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জেনেটিক্স ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সিস বেলাক্স রাশিয়ার ভ্যাকসিন ব্যবহারের এই অনুমোদনকে ‘বেপরোয়া ও বোকামি সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘যথাযথভাবে পরীক্ষা-নিরিক্ষা না করেই গণহারে মানুষের জন্য ভ্যাকসিন ব্যবহারের এমন অনুমোদন অনৈতিক।’
জার্মানির ইউনিভার্সিটি হসপিটালের বিশেষজ্ঞ পিটার ক্রেমসনারও মস্কোর তৈরি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তড়িঘড়ি করে দেশটির ভ্যাকসিন ব্যবহারের এমন অনুমোদনের বিষয়টিকে ‘ বেপরোয়া’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও রাশিয়ার তৈরি ও অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেছে, তারা যে ভ্যাকসিন মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে, ওই ভ্যাকসিন নিয়ে মূল্যায়ন করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য পায়নি।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কোভিড -১৯ এ সারা বিশ্বে ২ কোটি ৫ লাখেরও বেশি লোক শনাক্ত হয়েছে এবং ৭ লাখ ৪৫ হাজাররের বেশি মানুষ মারা গেছে। সূত্র : সিএনএন
আগামীনিউজ/এসপি