করোনায় বিধ্বস্ত চীন, যুদ্ধাবস্থা থেকেও পরিস্থিতি ভয়াবহ

নিউজ ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০, ০৫:০৭ পিএম

চীনের উহান থেকে প্রাদুর্ভাব ঘটা প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া অন্য সব মহাদেশেই প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে ভয়াবহ এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সারা বিশ্বে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দিন দিন এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন দেশে।

গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দিনে দিনে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে যে শেষ পর্যন্ত চীন এটাকে তাদের জন্য মহাদুর্যোগ হিসাবে ঘোষণা করেছে। এবং বিশ্বের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে।

এমন এক সময় এই ভাইরাসটি দেখা দেয় যখন চীন নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নববর্ষের ছুটিতে চীনের কোটি কোটি মানুষ দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরতে যায়। সারা দেশেই উৎসবের পরিস্থিতি বিরাজ করে।

ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহর থেকে। করোনায় আক্রান্তের সিংহভাগই এই শহরের বাসিন্দা। চীনের অন্য প্রদেশে এবং বিশ্বের নানান দেশে যেসব আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে তাদের সকলই সম্প্রতি উহান শহর ভ্রমণ করেছে কিংবা কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিল 

ভাইরাসটি যাতে মহামারি হিসাবে ছড়িয়ে না যায় তার জন্য উহান শহর ছাড়াও পুরো হুবেই প্রদেশ লকডাউন করে রাখা হয়েছে এক মাসের বেশি সময় ধরে। ফলে প্রদেশটির প্রত্যেকটি শহর পরিণত হয়েছে একেকটি ভুতুরে শহর।

খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না এবং স্থানীয় প্রশাসন থেকেও বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক পরিবার থেকে ১ জন সদস্য প্রতি ৩দিন অন্তর অন্তর ঘর থেকে বের হয়ে খাদ্য সংগ্রহ করার সুযোগ পাচ্ছে।

নির্দিষ্ট কিছু সুপার শপ অল্প কিছু সময়ের জন্য খোলা রাখা হচ্ছে। কিন্তু চড়া মূল্য দিয়েও মিলছে না পর্যাপ্ত খাবার। স্থানীয় অনেক বাসিন্দা তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অভিমত প্রকাশ করে যে, উন্নত দেশে আর্থিক দিক দিয়ে সচ্ছল থেকেও হঠাৎ এভাবে খাবার সংকটে কোনোদিন পড়তে হবে এমনটা ভাবেননি কেউ।

এসব শহরে বসবাসরত সিরিয়া, ইয়েমেন ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের একাধিক নাগরিক জানান, ‘চীনের বর্তমান এই পরিস্থিতি যুদ্ধাবস্থার থেকেও ভয়াবহ। কারণ, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতেও মানুষ এই রকম বিপথের দিনে একে অপরে সঙ্গে মিলেমিশে থাকে। কিন্তু এখানে এমনটা হচ্ছে না কারণ করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে তাই কেউ কারো সাথে মিশতে চাচ্ছে না।

তাছাড়া, ভাইরাসটি বাতাসের মাধ্যমে যেহেতু ছড়াচ্ছে তাই মানুষ ঘরের বাইরে গিয়ে নিজের নিশ্বাসকেও বিশ্বাস করতে পারছে না। তবে, চীনে বর্তমানে কয়েক হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী অবস্থান করলেও তাদের কেউই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি।

 


আগামীনিউজ/মামুন