৬ মুসলিমের প্রাণ বাঁচিয়ে মৃত্যুমুখে হিন্দু যুবক 

নিউজ ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০, ০৩:০৯ পিএম

ঢাকা :  ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ঘিরে টানা চার দিন ধরে দাঙ্গার পর বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহতের সংখ্যা দুইশ ছাড়িয়ে গেছে। এখনো থমথমে আতঙ্কের নগরে পরিণত হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি।

এদিকে, ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বেছে বেছে মুসলিমদের ওপর ওপর হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদসহ মুসলিমদের অসংখ্য বাড়িঘর-দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তবে হাতের পাঁচটি আঙুল যেমন সমান হয় না, তেমনি হিন্দুদের মধ্যেও সবাই মুসলিমবিদ্বেষী নয়। বরং কেউ কেউ নিজের জীবন বাজি রেখে মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

তেমনই একজন প্রেমকান্ত বাঘেল। তিনি জানান, দিল্লির শিব বিহার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দাঙ্গার সময় দুর্বৃত্তরা তার প্রতিবেশী মুসলিমদের বাড়িতে পেট্রোলবোমা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেরিয়ে আসেন এ হিন্দু ব্যক্তি। জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রতিবেশীদের প্রাণরক্ষায়। আগুনে জ্বলতে থাকা ঘরগুলো থেকে একে একে বের করে আনেন আটকে পড়া ব্যক্তিদের।

বন্ধুর বয়স্ক মাকে জ্বলন্ত ঘর থেকে বের করতে গিয়ে নিজেই গুরুতর দগ্ধ হন প্রেমকান্ত। তবে বিপদ শেষ হয়নি। প্রেমকান্ত নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুসলিমদের বের করে আনলেও আর কেউই তাদের হাসপাতালে নিতে গাড়ি দেননি। অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়েছিল, কিন্তু সেটিও পৌঁছায়নি।

প্রেমকান্তের শরীরের অন্তত ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে না পারায় সারারাত সেভাবেই বসে থাকতে হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে বাঁচানোর আশাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। অবশেষে পরদিন সকালে কোনোরকমে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয় আহত প্রেমকান্তকে। তার চিকিৎসা চলছে, তবে জীবন এখনও সঙ্কটাপন্ন। সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস

আগামীনিউজ/মিজান