জনাকীর্ণ আদালতের ভিতরে বিচারককে লক্ষ্য করে জুতো নিক্ষেপ করলো আইএস জঙ্গি মুসা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতের কলকাতা নগর দায়রা আদালতে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা তখন ১২টা। আদালতে আইনজীবীদের ভিড়। আদালত কক্ষে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় আইএস জঙ্গি সন্দেহে ধৃত মসিউদ্দিন ওরফে মুসার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সবে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আচমকা বিচারকের দিকে উড়ে এল জুতো। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তা সপাটে গিয়ে পড়ল এক আইনজীবীর গালে!
আদালতের ভিতর ধৃত ব্যক্তির এই কীর্তিতে হতভম্ব হয়ে যান কলকাতা নগর দায়রা আদালতে উপস্থিত সবাই। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাগে তখন থরথর করে কাঁপছে মুসা। বিচারকের উদ্দেশে জুতো ছুড়ে নানা কটূক্তিও শোনা গিয়েছে মুসার মুখে। এর পরে কোনও রকমে তাকে লকআপে নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। এই ঘটনার পর আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আদালতে সশরীরে হাজির না করিয়ে এ বার থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মুসার সাক্ষ্যগ্রহণের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে।
এটাই প্রথম নয়, এর আগেও মুসার ‘রুদ্রমূর্তি’ দেখা গিয়েছে। জেলে থেকে সে খুন করার চেষ্টাও করেছে। কিছু দিন আগেই প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কলের পাইপ ভেঙে রক্ষীর মাথায় ঘা বসিয়ে দিয়েছিল মুসা। জেলের কুঠুরি থেকে এক বিচারাধীন বন্দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই রক্ষী। ওই রক্ষীর মাথায় এতটাই গভীর ক্ষত হয়েছিল যে, তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তারও আগে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকার সময়ে এক কারারক্ষীকে খুনের চেষ্টা করেছিলো বলে অভিযোগ ওঠে মুসার বিরুদ্ধে। সে বার অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন ওই রক্ষী। তাঁকে পাথরের চাঁই এবং চামচ দিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়। ওই চামচ ঘষে ঘষে ধারালো করেছিল মুসা। তারপর অতর্কিতে হামলাও করা হয়। এই দুটি ঘটনাতেই খুনের চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা রুজু হয়।
বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা মহম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসা ২০১৬ সালের ৪ জুলাই বর্ধমান স্টেশনে পুলিশের জালে ধরা পড়ে। এই মুহূর্তে সে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র হেফাজতে। তাকে জেরা করেছে এফবিআইয়ের গোয়েন্দারাও। বাংলাদেশ পুলিশের তদন্তকারীরাও কলকাতায় এসে মুসাকে জেরা করেছেন।
ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে মুসা। ভারতের মাটিতে মার্কিন নাগরিকদের উপরে হামলার ছক কষাছিল সে, এমনটাও জানতে পারেন গোয়েন্দারা।– সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আগামীনিউজ/এস