সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার ও ডাটা সুরক্ষায় নীতিমালা তৈরির আহ্বান

তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক আগস্ট ১২, ২০২১, ০৩:২৩ পিএম

ঢাকাঃ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার ও ডাটা সুরক্ষায় নীতিমালা তৈরির আহ্বান জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার রক্ষা ও নিরাপত্তায় কাজ করা সামাজিক সংগঠন, বাংলাদেশে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

বুধবার (১১ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মুক্ত বিশ্ব ও প্রযুক্তি বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মুক্ত চিন্তা ও মনের ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা, পারিবারিক কলহ, কপিরাইট, সাইবার ক্রাইম সামাজিক মাধ্যমে চলবে তা নিশ্চয়ই কাম্য নয়। যদি এর সঠিক ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে এই বিশ্ব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে বর্তমান সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এই আইনে কেবলমাত্র ব্যবহারকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। প্রযুক্তি পণ্য বিক্রয়, ডাটা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আওতায় আনা হয়নি।

সম্প্রতি চিত্রনায়িকা পরীমনির ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডকে নিয়ে যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে তা কতটুকু নীতি যোগ্য। আইনে অপরাধী প্রমাণিত না হওয়ার পূর্বেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়াল হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আইনত অপরাধ। ইতোমধ্যে রাশিয়া, ইউরোপ, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি ও ভিয়েতনাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, জার্মানি ২০১৮ সালে একটি আইন প্রণয়ন করেছে। আইনে বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট সম্পর্কে যদি কোনো অভিযোগ আসে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এমনকি আইনবিরোধী কোনো কনটেন্ট যদি কোনো ব্যবহারকারী শেয়ার করে তাকে ৫০ লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে আর সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ইউরো জরিমানা করা যাবে।

ইতোমধ্যে ব্রিটিশ সরকার কোনো ক্ষতিকর কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, জরিমানা বা ওই প্রতিষ্ঠানকে ব্লক করে দেয়ার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউটিউব প্রায় ৭৮ লাখ ভিডিও তাদের সাইট থেকে অপসারণ করেছে। এ কনটেন্ট সরানোর ক্ষেত্রে তারা নিজস্ব প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে প্রায় ৮০ শতাংশ। ভিডিও দেখার আগেই সরিয়ে ফেলেছে তিন-চতুর্থাংশ। ফেসবুক সূত্রে জানা যায়, গত বছর তারা এক কোটি ৫৪ লাখ আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ৮৪ লাখ। এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীকে অপব্যবহারের ফাঁদে ফেলে দেশে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ও ডাটা সুরক্ষায় তাই নীতিমালা প্রণয়ন সময়ের দাবি। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।