লন্ডনে ‍‍`বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট-ইউকে ডেস্ক‍‍` চালু

তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক জুন ৬, ২০২১, ০৯:২২ এএম

ঢাকাঃ দেশের আইটি কোম্পানির ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট-ইউকে ডেস্ক’ শীর্ষক এক বিশেষ ভার্চুয়াল ডেস্ক চালু করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বৃহস্পতিবার (৩ জুন) এ ভার্চুয়াল ডেস্কের উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সর্ম্পকের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) এলআইসিটি প্রকল্প ও লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত ‘বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট-ইউকে ডেস্ক’ মূলত বাংলাদেশ-ইউকে বিটুবি আইটি কানেক্টিভিটি হাব, যা দেশের আইটি কোম্পানির সাথে যুক্তরাজ্যের আইটি কোম্পানির ব্যবসায়িক সংযোগ ও সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থাসহ যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ প্রসারে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম-এর সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশ ও ইউকে এ্যাট ৫০: ফোরজিং এ ডিজিটাল ইকোনমি পার্টনারশীপ’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এবং যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিসে (এফসিডিও) কমনওয়েলথ প্রতিমন্ত্রী লর্ড তারিক আহমদ প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিটিশ মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমদ তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক ডিজিটাল অর্থনীতি প্রসারে বাংলাদেশকে যুক্তরাজ্যের নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ''প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সরকার এবং মানুষের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক জোড়দার করার মাধ্যমে উভয় দেশ দ্রুততার সাথে ডিজিটাল অর্থনীতিতে উন্নীত হতে পারে।''  তিনি যুক্তরাজ্যের উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক আরো জোড়দার করার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিরও পরামার্শ দেন।

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্ক যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ্যাডওয়ার্ড হীথ ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তার ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা লন্ডন হাইকমিশনে ভার্চুয়াল আইটি হেল্প ডেস্ক এবং একটি বিটুবি কানেক্টিভিটি পোর্টাল চালু করতে পেরে খুবই আনন্দিত। এ ভার্চুয়াল ডেস্কে একজন নিবেদিত কর্মকর্তা ব্রিটিশ আইটি কোম্পানি, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি, আউট সোর্সিং ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক ও বিনিয়োগ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।”

তিনি উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যেই প্রায় ১০০টি প্রতিষ্ঠান বিটুবি কানেক্টিভিটি পোর্টালে রেজিষ্ট্রেশন করেছে। ‘‘বাংলাদেশ ও ইউকে এ্যাট ৫০: ফোরজিং এ ডিজিটাল ইকোনমি পার্টনারশীপ” শীর্ষক আলোচনা যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের সাথে বাংলাদেশের আইটি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংযোগ স্থাপন ও ব্যবসায়ের সুযোগ অন্বেষণে বিশেষ সহায়ক হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট লর্ড বিলিমোরিয়া বলেন, “যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সম্পর্ক আরো জোড়দার করা হলে উভয় দেশই ব্রেক্সিট ও কোভিড পরবর্তী অর্থনীতি পুর্নগঠনে কার্যকর সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবে।”

উদ্বোধনী অধিবেশনে ব্রিটিশ কম্পিউটার সোসাইটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক পরিচালক স্টিফেন টোয়েড এবং বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বক্তব্য রাখেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে দুই দেশের প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন বিএসিসিও-এর সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরীফ, কোয়ান্টানাইট ইউকে-এর সিইও মিক্কো তাম্মিনেন, প্যাথফাইন্ডারের সিইও এবং ইনফিনিটি টেক-এর চেয়ারম্যান ইফতি ইসলাম এবং এসবিকে টেক ভেন্চারের প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান ও সিইও সোনিয়া বশির কবির।

এছাড়া বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের প্রখ্যাত কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন। এসব কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিলো ভিওন গ্লোবাল ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস, কিংসওয়ে ক্যাপিটাল, অলিক, কাটআউটউইজ, পাঠাও এবং এসবিকে টেক।