রমজানেও চলবে করোনার টিকাদান: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৩১, ২০২২, ০২:৫৫ পিএম

ঢাকাঃ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান টিকাদান কর্মসূচি আসন্ন রমজান মাসেও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস থেকে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে রমজান মাসেও স্বাভাবিক নিয়মে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে। টিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হবে।

গণটিকা কার্যক্রম আরও তিনদিন চলবে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা ৮০ শতাংশ মানুষের টিকাদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। এ লক্ষ্যপূরণে সারাদেশে গণটিকা কার্যক্রম আরও তিনদিন চলমান থাকবে।’

করোনা মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া টার্গেট জনগোষ্ঠীর ৯৬ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় আমরা করোনা মোকাবিলায় সফলতা দেখিয়েছি। বিশ্বে উন্নত দেশগুলোতে যখন লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে আমাদের দেশে ২৯ হাজারের কিছু বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কোনো মৃত্যুই কাম্য নয়। তবুও মৃত্যু হার কম রাখতে পারা আমাদের একটি বড় সফলতা। আমাদের সংক্রমণও কমে এসেছে। এটি সম্ভব হয়েছে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণে। আমরা বারোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর শতকরা ৯৬ শতাংশকে টিকার আওতায় নিয়ে এসেছি।’

টিকার তথ্য তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ যখন টিকার সংস্থান করতে পরেনি, তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে টিকা দেওয়া শুরু করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত ১৩ কোটির অধিক প্রথম ডোজ, ১১ কোটির অধিক মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দিয়েছি। একইসঙ্গে বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রম চলমান আছে। শুধুমাত্র গত কয়েকদিনে আমরা আড়াই কোটি ডোজ টিকা প্রদান করেছি।’

স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা স্বাস্থ্যখাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। স্বাস্থ্য সেবার মান নিশ্চিতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা সেক্টরে স্বাস্থ্যখাত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব চিন্তা কমিউনিটি ক্লিনিক দেশের স্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান পালন করছে। প্রথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে এই কমিউনিটি ক্লিনিক। আমরা প্রতিটি খাতে কাজ করে যাচ্ছি। সরাদেশে ৩৭টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে, যার ২৫টিই শেখ হাসিনার শাসনামলে হয়েছে। আমরা মেডিকেল শিক্ষার পরিধি বাড়াতে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক হাজার ২০০-এর মতো সিট বাড়িয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মোট  ৮০০ অ্যাম্বুলেন্স ও ৪৫০টি জিপ দিয়েছি।’

স্বাস্থ্যসেবার বিকেন্দ্রীকরণ ও ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প নেওয়া হয়ে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা বিকেন্দ্রীকরণে আট বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার, কিডনি ও হার্ট রোগীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করা হচ্ছে। এসব হাসপাতালে মোট তিন হাজার ৮০০ শয্যা রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা হাসপাতালগুলোতে ১০ শয্যার আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু করা হয়েছে। ধাপে ধাপে প্লাস্টিক সার্জারি, অর্থোপেডিক্স ও মানসিক চিকিৎসারও ইউনিট করা হবে। সকল হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে যেনো কেন্দ্র থেকে তাদের মনিটরিং করা যায়।

স্বাস্থ্য পুরস্কারের মাধ্যমে সেবার মান বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের তাদের বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হবে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, অতিরিক্ত সচিব বেগম জেবুন্নেসা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মুহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতেরর মহাপরিচাল অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন প্রমুখ।

এমএম