ব্রী ৮৭ জাতের ধান সৈয়দপুরের চাষীদের মাঝে সাড়া ফেলেছে

জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১, ০২:২৭ পিএম
ছবি : আগামী নিউজ

নীলফামারীঃ জেলার সৈয়দপুরে ব্রী ৮৭ জাতের ধান চাষীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফলন মিলছে বেশ। এ জাতের ধান হেক্টর প্রতি সাড়ে ৬ টন উৎপাদন হচ্ছে। আমন ধানের আগে এই জাতের ধান ঘরে তোলা যায়। বাজারে দামও মিলে ভালো। আবার ধান কাটা মাড়াই শেষে চাষ করা যায় রবি ফসল। বীজ বপণ থেকে ধান পাকা পর্যন্ত সময় লাগে এই জাতের ধানের ১২৭ দিন। ফলে অনায়সে শীতকালিন সবজি চাষ করা যায়। আগাম সবজি উৎপাদন হলে বাজারে চাহিদা থাকায় চাষিরা দামও পায় ভালো। রবি ফসল তুলে এই জমিতেই চাষ করা হয় বোরো ধান। অর্থাৎ একই জমিতে বছরে তিনটি মূল্যবান ফসল ফলে। ওই জাতের ধান বাদেও ব্রী ৩৩ ও বীণা ৭ জাতের ধানের আবাদেও চাষীরা ঝুকেছে।

অধিক মানুষের মুখে অল্প জমি থেকে খাবার জোগান দিতেই কৃষি দপ্তর এসব ধান চাষ করতে চাষীদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। বীজ ও সারও দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা অনবরত উন্নত বীজে উন্নত ফসল ফলাতে প্রযুক্তি বিষয়ে চাষীদের সচেতন করে তুলছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের সুযোগ হয় অগ্রহায়ন মাসের ২য় সপ্তাহ থেকে জমি থেকে ধান ঘরে তুলতে পৌষের মাঝামাঝি সময় চলে যায়। এতে করে জমি প্রায় ৩ মাস পড়ে থাকে। ওইসব জাতের ধান আবাদ করলে ভাদ্র মাসের শেষ হতে আশ্বিন মাসের ১ম সপ্তাহে কাটা মাড়াই করে সংরক্ষণ করা সম্ভব। একই সঙ্গে চাষীরা বাড়তি ধান বিক্রি করে রবি ফসল চাষে বিনিয়োগ করতে পারে। ভাতের চাহিদা মেটাতেও কোন সমস্যা থাকে না। সবমিলে চাষিরা লাভের মুখ দেখে। ফসল ফলিয়ে আনে তারা সংসারে স্বচ্ছলতা।

কথা হয় বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের জামবাড়ি এলাকার চাষী সাইফুল ইসলাম হাবলুর সঙ্গে। তিনি আগামী নিউজকে বলেন ভুট্টা তুলে ওই জমিতে ব্রী ৩৩ জাতের ধান লাগানো হয়েছে। এ জাতের ধানে বাড়তি তেমন খরচ হয় না। মাত্র ১১৮ দিনে ঘরে ফসল তোলা যায়। একই জমিতে ধান কাটার পর শীতকালিন সবজি ফুলকপি চাষ করা হয়। ফুলকপি তুলে আবার ভুট্টা চাষ করা সম্ভব। প্রায় ৭০ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে খরচ বাদেও তার ৩০ হাজার টাকা আয় হয়েছে। চালের সঙ্গে সবজি মিললে চাষীরা অনেক বেশি উপকৃত হয়। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বাজারেও বিক্রি করা যায়। এর ফলে পেট ও মন দুই শান্তিতে থাকে।

কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহিনা খাতুনের সঙ্গে। তিনি আগামী নিউজকে বলেন একই জমিতে ভ্যারাইটিজ ফসল উৎপাদন হলে মাটির গুনাগুন ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তার মতে এ বছর পরীক্ষামূলক ভাবে ব্রী ৮৭, ব্রী ৩৩, বীণা ৭ জাতের ধান ৫৩৪ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে। চাষীরা বাস্তবে যাতে লাভবান হয় সেজন্য কৃষি দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে ব্যাপক ভাবে এসব জাতের ধান যাতে চাষীরা আবাদ করে সেই লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এক কথায় খাদ্যের চাহিদা পূরণের সঙ্গে আর্থিক লাভবান যাতে চাষীরা হয় সেটাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।