নিত্য নতুন বা বিদেশি ফল-সবজি উৎপাদন করা শখ দীর্ঘদিনের। সেই শখ বা আগ্রহ থেকেই বিদেশি সবজি বীটরুট চাষ করেছেন তিনি। তিনি মোবাররক হোসেন। পড়াশুনার পাশাপাশি এসব চাষ করে থাকেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম রাঙ্গিয়ারপোতায় তার বসবাস।
দেশে এ সবজির বীজ সংগ্রহ করতে না পারায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বীটরুটের বীজ নিয়ে আসেন তিনি। তারপরই পরিকল্পনা মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তার নিজস্ব আট বিঘা জমিতে বীজ বপন করে যত্ন নিতে শুরু করেন। শীতকালীন সবজি আবাদের সঙ্গে মিল রেখে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বীটরুটের বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৭০-৮০ দিনের মধ্যে এ সবজি বিক্রি উপযুক্ত হয়।
বীজ বপনের পর থেকেই এ জাতের সবজি বিক্রি উপযুক্ত হওয়ায় বেশ কয়েক ধাপে তা বাজারে বিক্রি করা হয়। এখনো পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ের বাজারে তেমন সাড়া না পেলেও বড় বড় শহরের সবজি বাজার ও সুপার শপগুলোতে এর চাহিদা অনেক। তাই এসব সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। বাজার দামও বেশ ভালো পাওয়ায় তিনি খুশি ।
বীটরুট সাধারণত মাটির নিচের সবজি। অনেকটা গাজর কিংবা মুলার মতো করে চাষাবাদ করা হয়। তাই সবজিটি তোলার উপযুক্ত হলেই তা মাটি থেকে গাছসহ উপড়ে ফেলা হয়। বীটরুটের ভেতর ও বাইরের রং গাঢ় লাল।
তিনি বলেন, যেহেতু প্রথমবারের মতো এ জাতের সবজির আবাদ করেছি তাই ফলন কেমন হয় তা নিয়ে কিছুটা ভয় ছিল। তবে প্রত্যাশার তুলনায় ভালো ফলন পেয়েছি। বাজারে চাহিদাও রয়েছে। এছাড়া বীটরুট আবাদে কোনো কীটনাশক কিংবা বিষ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।
প্রতি বিঘা জমিতে বীটরুট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১২-১৫ হাজার টাকা। বিপরীতে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৫০০ কেজি করে বীটরুট পেয়েছি। যা প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমি থেকে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাশরুর জানান, চুয়াডাঙ্গায় বরাবরই ভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বীটরুট আবাদ করা হয়েছে।
এবারই প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বীটরুট আবাদ করে বেশ সাড়া পেয়েছেন চাষি। তাই জেলার অন্য কৃষকদের বীটরুট চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
আগামীনিউজ/হাসি