রাঙামাটির পাহাড়ে মিশ্র ফসলের চাষ করে এক কিষানি চমক সৃষ্টি করেছেন । তিনি নিজ উদ্যোগে রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি এলাকার ব্রাহ্মটিলার পাহাড়ে গড়ে তুলেছেন মিশ্র সবজির বাগান।
চলতি মৌসুমে তার বাগানে হয়েছে বাম্পার ফলন। পাহাড়জুড়ে সোভা পাচ্ছে চিচিঙ্গা, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, মরিচ, কাঁকরোল, লালশাক, সরিষা শাক, টমেটো, কপিশাক, মিষ্টিকুমড়া, কুমড়াসহ নানা জাতের সবজি। আবার ওই সবজি স্থান দখল করেছে রাঙামাটির বিভিন্ন বাজারে। সে সবজির দাম যেমন কম, চাহিদাও তেমনি বেশি। শুধু এ মৌসুমে এরই মধ্যে কৃষাণি সোমা বেগম সবজি বিক্রি করেছেন লক্ষাধিক টাকার।
কিষানি সোমা জানান, স্বামী জসিম উদ্দীন ও শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে তিনি চলতি মৌসুমে রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি এলাকার ব্রাহ্মটিলার পাহাড়ে নানা জাতের মিশ্র ফসল চাষ শুরু করেন। পাহাড়ি মাটিতে কোনো সেচব্যবস্থা ছাড়াই তাদের সঙ্গে নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে এক পাহাড়ে খন্দে খন্দে বপন করেন চিচিঙ্গা, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, মরিচ, কাঁকরোল, লালশাক, সরিষা শাক, টমেটো, কপিশাক, মিষ্টিকুমড়া ও কুমড়া। সময়মতো পানি, সার দেয়া এবং সঠিক পরিচর্যার কারণে ফলন হয়েছে বাম্পার। আশপাশের এলাকাবাসীসহ দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন তার বাগানের সবজি সংগ্রহ করতে।
তিনি বলেন, শুধু মৌসুমি সবজি নয়, তার পাহাড়ে আছে আম, কাঁঠাল, বরই, নারকেল, পেয়ারা, সুপারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সেসব গাছের ফলন স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত হয় বিভিন্ন বাজারে। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে আরো বড় পরিসরে এ মিশ্র ফসলে বাগান গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
রাঙামাটি কৃষি বিভাগ বলছে, রাঙামাটির অনেক পাহাড়ে বাসিন্দা আছেন, যারা নিজ উদ্যোগে এমন চাষাবাদ করে থাকেন। পাহাড়ি মাটি চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলনও হয় ভালো।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, যারা কিষান-কিষানি তাদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে সারের সঠিক ব্যবহারসহ গাছ পরিচর্যার বিষয়েও বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, যাতে তারা পরিশ্রমের মূল্য পান। এমনিতে পাহাড়ের অবহাওয়া চাষের উপযোগী, মাটিও বেশ উর্বর। তাই এখানে যে কোনো ফসলের ভালো ফলন হয়। যাদের বাগানে পোকাজনিত সমস্যার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যায় তাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
আগামীনিউজ/হাসি