শুরু হয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন

ডেস্ক রিপোর্ট অক্টোবর ১০, ২০২১, ১২:০৭ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ দুই বছর পর আবারও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি) এমপিওভুক্তির আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে আজ রোববার (১০ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। 

গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট (http://www.shed.gov.bd), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (http://www.dshe.gov.bd) এবং বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ওয়েবসাইটে (http://www.banbeis.gov.bd) Online MPO Application শিরোনামের লিংকের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন সরাসরি, ই-মেইল বা পত্রের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অথবা এর অধীনস্থ কোনো দপ্তরে গ্রহণ করা হবে না। বিশেষভাবে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের সব কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে। এ পদ্ধতিতে নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

২০১৯ সালে সালের অক্টোবরে দীর্ঘ নয় বছর পর দুই হাজার ৬২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। এরপর গতবছর নতুন করে আর কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারও আগে ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।

২০১৯ সালে ২৩ অক্টোবর দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চূড়ান্ত বাছাইয়ে দুই হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ছাড়পত্র পায়। এরপর আবার ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়।

দেশে এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। আর এমপিওভুক্ত হয়নি এখনো প্রায় ছয় হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও করার জন্য গত ২৯ মে ‘সংশোধিত এমপিও নীতিমালা’ প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ মুহূর্তে সারাদেশের ছয় হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ননএমপিও। বাকিগুলো আংশিক এমপিওভুক্ত অর্থাৎ কোনো কোনো স্তর এমপিওভুক্ত। তারা স্তর পরিবর্তনের এমপিওর জন্য আবেদনের অপেক্ষায়। নিম্ন মাধ্যমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত, মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হওয়াকে ‘এমপিওর স্তর পরিবর্তন’ বলা হয়।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য গত ২৯ মে সংশোধিত এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশোধিত নীতিমালায় এমপিওভুক্তির জন্য তিনটি শর্ত দেয়া হয়েছে।

শর্তগুলো হলো

শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থী সংখ্যা এবং পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার- এই তিন বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০, পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০ এবং পাসের হারে ৪০ নম্বর রাখা হয়েছে। আগের নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির মেয়াদের ওপর ২৫ নম্বর ছিল, যা সংশোধিত নীতিমালায় বাদ দেয়া হয়েছে।

২০২১ সালের নীতিমালায় কোন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম কতজন শিক্ষার্থী থাকতে হবে, তা বেঁধে দেয়া হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, নিম্ন মাধ্যমিকে শহরে ১২০ ও মফস্বলে ৯০, মাধ্যমিকে শহরে ২০০ ও মফস্বলে ১৫০, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহরে ৪২০ ও মফস্বলে ৩২০, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে শহরে ২৫০ ও মফস্বলে ২২০ এবং ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে শহরে ৪৯০ ও মফস্বলে ৪২৫ শিক্ষার্থী থাকতে হবে। পাসের হার স্তরভেদে ৪৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।

গত ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, তাতে শিক্ষা খাতে ৭১ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৫ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা।

আগামীনিউজ/বুরহান