সিরাজগঞ্জঃ জেলার শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে।
রবিবার দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় শিক্ষার্থীরা এলে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক’দিন ধরেই ছাত্রদের চুল বড় রাখার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন প্রক্টর। যে কারণে বেশিরভাগ ছাত্র চুল ছোট করে ফেলেছিলেন।
তবে ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় শিক্ষার্থীরা দেখতে পান যে, গেটে কাঁচি হাতে দাড়িয়ে আছেন প্রক্টর।
এসময় যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের মাথার সামনে থেকে বেশ খানিকটা চুল কেটে দেন তিনি। একে একে ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কাটা হয়।
এভাবে সবার সামনে লাঞ্ছিত করায় ক্ষুব্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের জন্য তারা জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে। তবে এসময় একটি পক্ষ তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করে।
পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পোস্ট দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।
এদিকে এ ঘটনার শিকার এক শিক্ষার্থী লজ্জায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলেও জানা গেছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, এ ধরনের কোন বিষয় আমার জানা নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি তা বলছি না। তবে কয়েক দিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এসব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোন ছাত্র দেয়নি। এটা একটা গুজব। তবে, আমার একটু রাগ বেশি ঠিক আছে। কিন্তু আমি কখনো কাউকে বকাঝকা করি না।
এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগও পাইনি। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য কোন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে না। সরকারের নিয়মের মধ্যেই এটা করা হচ্ছে। এতে সরকারি আদেশ অমান্য হয়নি।