তিন জন চিকিৎসকে চলছে নোবিপ্রবির  মেডিকেল সেন্টার,চিকিৎসা সেবায় ভোগান্তি

এস আহমেদ ফাহিম, নোবিপ্রবি সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১, ০২:৫৯ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

নোয়াখালীঃ তিন জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এর মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসাব্যবস্থা।ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ হাজার আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবা দিতে নির্মিত এই মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাসেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,মেডিকেল সেন্টারের ৩ জন চিকিৎসকই মহিলা ।দেড় বছর আগে প্রধান মেডিকেল অফিসার চলে যাওয়ায় নেই কোনো পুরুষ চিকিৎসক।  নতুন করে  চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয় নি। ফলে চাহিদামতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না বলে জানায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে অসুস্থ হলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে ডাক্তার দেখানোর পর অল্প মূল্যের কিছু ওষুধ ছাড়া কোনো ওষুধ দেওয়া হয় না।এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই।এমনকি মেডিকেল সেন্টারের ওজন মাপার যন্ত্রের সঠিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘরে বসে বিভিন্ন সময় ফোনকলের মাধ্যমে সেবা নিয়ে থাকি।আমরা ছেলেরা একজন পুরুষ ডাক্তারের সঙ্গে যেভাবে সব সমস্যা শেয়ার করতে পারি সেভাবে একজন মহিলা ডাক্তারের সঙ্গে সকল সমস্যা শেয়ার করতে পারি না। এ ছাড়া কোনো ছাত্র অসুস্থতার জন্য হেঁটে মেডিকেল যেতে না পারলে একজন মহিলা ডাক্তার ছাত্রদের আবাসিক হলে এসে চিকিৎসা দেওয়া কষ্টকর। তাই মহিলা ডাক্তারের পাশাপাশি পুরুষ ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের দাবি, নিউরোলজিস্ট ও চক্ষু চিকিৎসকসহ ভালোমানের দক্ষ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সহ পর্যাপ্ত পরিমাণে বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও অন্তত ১০-১৫ টি শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল সেন্টার এর ব্যবস্থা করা।এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও নিয়মিত কাউন্সিলিং প্রোগ্রাম চালু করার দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন মহসিন জানান, আমাদের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক থাকলেও কোনো পুরুষ চিকিৎসক নেই। যার কারণে অনেকেই মেডিকেল সেন্টারে যেতে চান না।তাছাড়াও আমাদের মেডিকেল সেন্টারের যন্ত্রপাতিগুলো শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। আর প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গেলে যখন সাধারণ পথ্যগুলো ও পাওয়া যায় না তখন মনে হয় এ যেন এক ঢাল-তলোয়ারবিহীন নিধিরাম সর্দার।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের  মেডিকেল অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন বলেন, পুরুষ ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করব।বর্তমানে ৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আরও চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মেডিকেল এর চিকিৎসা কার্যক্রম আরও ভালো করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবতেছি। বর্তমান যেসব মহিলা ডাক্তার রয়েছেন তারা আগেই নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ থাকায় নতুন করে ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়নি।শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পরবর্তী নিয়োগে পুরুষ ডাক্তারের বিষয়টি মাথায় রেখেই ব্যবস্থা করা হবে। মেডিকেলের জন্য নতুন ভবন করা হয়েছে এবং সেখানে এটিকে স্থানান্তর করা হয়েছে।এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের সেবা দিতে চিকিৎসাব্যবস্থা আরও উন্নত করা হবে বলে জানান উপাচার্য ।