করোনাকালে ইবিতে চুরির হিড়িক, ক্ষতিপুরণ দাবি

এম.বি রিয়াদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আগস্ট ৯, ২০২১, ১২:১৭ পিএম
ফাইল ফটো

কুষ্টিয়াঃ করোনাকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) চুরির হিড়িক পড়েছে। নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একের পর এক চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি তিনটি আবাসিক ছাত্র হল ও একাডেমিক ভবনে চুরির ঘটনা ঘটেছে।

সর্বশেষ শনিবার (৭ আগস্ট) বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রী হলে আরেকটি চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

জানা গেছে, ওই ছাত্রী হলের কনস্ট্রাকশনের (রিপেয়ারিং) কাজ চলছিল। অন্যদিনের মতো ৭ই আগস্ট শ্রমিকরা কাজে এলে হলের নিচ তলার বারান্দার গ্রিল ভাঙা দেখতে পান। পরে নিরাপত্তাকর্মী ও প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়।

হলের নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, প্রাচীর টপকে গ্রিল ভেঙে হলের ডাইনিংয়ে ঢোকে চোর। ডাইনিং থেকে ছয়-সাতটি বেসিনের স্টিল ট্যাপ চুরি হয়েছে। কক্ষের সামনে তালাগুলো পড়ে আছে। এছাড়া কক্ষের ভেতরে সবকিছু এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। হলের পুরাতন ব্লকের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ তলার ৯টি রুম থেকে জিনিসপত্র চুরি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হল প্রশাসন। তবে হল বন্ধ থাকায় কী কী জিনিস চুরি হয়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।

এদিকে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসে চুরির ঘটনায় তিন দফা দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ। তাদের দাবিগুলো হলো-ক্যাম্পাসে উচু টাওয়ার নির্মাণ করে বাড়তি প্রহরী নিযুক্ত করে সিসি ক্যামেরাগুলো সচল ও ফুটেজ সংরক্ষণ করা, চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুরণ দেয়া এবং এসব ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এদিকে ৮ই আগস্ট সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, প্রক্টর ও ইবি থানা পুলিশ। পরিদর্শন শেষে প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে কী হারিয়েছে তা মেয়েদের সঙ্গে কথা না বললে বোঝা যাচ্ছে না। হল কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি। হল প্রভোস্ট ড. রেবা মন্ডল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের কক্ষে চুরি, শেখ রাসেল হল থেকে লক্ষাধিক টাকা মূল্যের সাবমার্সিবল পাম্প চুরি ও রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের পাশ থেকে দুই ভ্যান টাইলস ও আট কার্টন ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংলগ্ন এলাকায় এক ছাত্রীর মোবাইল ও ক্যাম্পাসে এক বৃদ্ধের ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

এদিকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের নির্মাণ সামগ্রী চুরি করতে এসে হাতে নাতে ধরা পড়ে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর। জিজ্ঞাসাবাদে চুরির দায় স্বীকার করে সে। এসময় সে তার কয়েকজন সহযোগীদের নাম প্রকাশ করে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোনো অভিযুক্তকেও আটক করতে পারেনি ইবি থানা পুলিশ।