নোয়াখালীঃ করোনাকালীন সময়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিষয়ে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি উঠে এসেছে।
আজ (২৯ জুলাই) এ বিষয়ে গবেষণাপত্রটি হতে জানা যায়।ইতিমধ্যে গবেষণাটি 'এশিয়ান জার্নাল অফ ইউনিভার্সিটি এডুকেশন' এ প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির পাশাপাশি পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার বিষয়টিও এই গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণাটি নোবিপ্রবি রিসার্চ সেলের অর্থায়নে পরিচালিত হয়।গবেষণাটি করেন নোবিপ্রবির সোশিয়লজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান সিদ্দিকী এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ টি বিভাগের ১৫৭ জন শিক্ষার্থী এই গবেষণায় মতামত প্রদান করেন।এদের মধ্যে ১০.২ শতাংশ (১৬ জন) ১ম বর্ষের,২২.৯ শতাংশ (৩৬ জন) ২য় বর্ষের,৩৯.৫ শতাংশ (৬২ জন) ৩য় বর্ষের এবং ২৭.৪ শতাংশ (৪৩ জন) ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মতামত প্রদান করেন। অংশগ্রহণকারীদের ৩৮.২ শতাংশ (৬০ জন) ছেলে এবং বাকি ৬১.৮ শতাংশ (৯৭ জন) মেয়ে।
এদের মধ্যে ফিমস, ফার্মেসি, অণুজীববিজ্ঞান, বিজিই, ওশেনোগ্রাফি, ইংরেজি, ইইই, সোশিয়লজি, আইন, সিএসটিই, এমআইএস, বিএলডব্লিওএস, ইএসডিএম, এগ্রিকালচার, টিএইচএম, এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস, এডুকেশন, ইকোনমিকস বিভাগের শিক্ষার্থীরা মতামত প্রদান করেন।
গবেষণাটিতে করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের অতিমাত্রায় মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি এবং পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার বিষয়ে তুলে ধরেন গবেষকরা। এছাড়াও পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার সাথে মানসিক অবস্থার পরিবর্তণের সম্পর্কও তুলে ধরা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা পরিবর্তন নির্ণয়ের জন্য ৬ টি নির্দেশক (দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা, হতাশা, উদ্বেগ, বিরক্তি, ভয়) ব্যবহার করা হয় গবেষণায়। এতে দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা, হতাশা, উদ্বেগ, বিরক্তি, ভয়ের পক্ষে মতামত দেন এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অল্পমাত্রায় দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা, হতাশা, উদ্বেগ, বিরক্তি, ভয়ের পক্ষে মতামত দেন।
এছাড়াও অংশগ্রহণকারীদের ৮৭.৯ শতাংশ (১৩৮ জন) বেশিমাত্রায় অমনোযোগী এবং বাকি ১২.১ শতাংশ (১৯ জন) কম অমনোযোগী এর পক্ষে মতামত প্রদান করেন।
করোনাকালীন সময়ে অধিক শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ও পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয় গবেষণায়। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ও পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে নোবিপ্রবিসহ দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সেলিংয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন গবেষকরা।