ঢাকায় প্রতি বর্গফুট চামড়ার সর্বোচ্চ দাম ৫৫ টাকা, সারাদেশে ৪৮

নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৫, ২০২৩, ১২:৫৬ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকাঃ আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে গত বছরের চেয়ে ৩ টাকা বাড়িয়ে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বছর এই দাম ছিল ৪৭ থেকে ৫২ টাকা।

এছাড়া সারাদেশে গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৪ টাকা।

রোববার (২৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সভায় এই দাম নির্ধারণ করা হয়। সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নতুন নির্ধারিত দাম ঘোষণা করেন। 

এসময় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ঢাকায় গত বছরের চেয়ে ৩ টাকা, ঢাকার বাইরে ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আর খাসি ও বকরির চামড়ার দাম গতবারের মতোই রাখা হয়েছে।

তিনি জানান, ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এর আগের বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ছিল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ছিল ১২ থেকে ১৪ টাকা বর্গফুট।

পশুর চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানোর পদ্ধতি

• চামড়া ছাড়ানোর সময় প্রথমেই পশুর সামনের এক পা থেকে বুকের উপর দিয়ে অন্য পা পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে এবং পেছনের এক পা থেকে অন্য পা পর্যন্ত লেজের গোড়া থেকে প্রায় ৪-৬ ইঞ্চি উপর দিয়ে লম্বালম্বিভাবে কাটতে হবে। একইসঙ্গে চামড়ার জবাই স্থান থেকে পেটের উপর নিয়ে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে কাটতে হবে।

• পশু জবাইয়ের পর চামড়া আড়াআড়িভাবে কাটার জন্য চালের মধ্যে ছুরি এবং চামড়া ছাড়ানোর জন্য অবশ্যই বাঁকানো মাথার ছুরি ব্যবহার করতে হবে।

• কোরবানির পশু জবাইয়ের পর রক্তমাখা ছুরি কোনোভাবেই পশুর চামড়ায় মোছা যাবে না, এতে চামড়ার ক্ষতি হতে পারে।

• কাঁচা চামড়ায় বড় ধরনের ত্রুটি (লেস-কাট); যা অসতর্কতা, অজ্ঞতা ও ভুল ছুরি ব্যবহারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, সতর্কতা ও বাঁকানো মাথার ধারালো ছুরি ব্যবহার করে লেস-কাট হ্রাস করা সম্ভব।

কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ পদ্ধতি

• চামড়া ছাড়ানোর পর লবণ দিয়ে সংরক্ষণের পূর্বে অবশ্যই চামড়ায় লেগে থাকা চর্বি, মাংস, মাটি এবং গোবর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে চামড়ায় লবণ প্রয়োগ করতে হবে।

• কাঁচা চামড়া ছাড়ানোর পর সংরক্ষণের জন্য (গরুর চামড়ার ক্ষেত্রে ৭-৮ কেজি এবং ছাগল/ভেড়ার চামড়ার ক্ষেত্রে ৩-৪ কেজি) লবণ প্রয়োগ করতে হবে। লবণ এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যেন চামড়ার ফ্লেশ সাইডের কোনো অংশ ফাঁকা না থাকে, লবণ সমভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে।

• চামড়া ছাড়ানোর ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই লবণ লাগাতে হবে এবং সংরক্ষণের জায়গা একটু ঢালু হতে হবে যেন চামড়া থেকে পানি ও রক্ত সহজেই গড়িয়ে যেতে পারে।

• লবণ দেওয়া চামড়া এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেন রোদ বা বৃষ্টির পানি না লাগে এবং বাতাস চলাচল স্বাভাবিক থাকে।

সাত দিন স্থানীয়ভাবেই চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কাঁচা চামড়া যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য কোরবানির পর সাত দিন স্থানীয়ভাবেই সংরক্ষণ করতে হবে। এই সাত দিন বাইরে থেকে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে বাইরে কোনো চামড়া পরিবহন করতে দেওয়া হবে না। এজন্য সরকারের জননিরাপত্তা বিভাগ, বিজিবি এবং পুলিশের সর্বোচ্চ নজরদারি থাকবে। চামড়ার চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তদারকি বাড়ানো হবে। এছাড়া সচেতনতামূলক পোস্টার ব্যবহারসহ সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচার বাড়ানো হবে।

বুইউ