পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়া‌তে চায় রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৬, ২০২০, ০৮:৪২ পিএম

বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের দুই পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এক-দুই দিন বিরতি দিয়ে দিয়ে বাজারে টানা দর পতন হচ্ছে। কমছে সূচক। টানা পতনের প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টরা নড়েচড়ে বসে। 

এ অবস্থায় পুঁজিবাজারের চলমান অস্থির অবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংক। এরপরই কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার।

সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সরকারি চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ত্রৈমাসিক বৈঠক হয়। বৈঠকে পুঁজিবাজারের চলমান অস্থির অবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ত্রৈমাসিক ওই বৈঠকে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহীসহ (সিইও) এমডিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অন্যান্য নিয়মিত বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হয়।

এ সময় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে সভার অনুকূলে মতামত প্রদান করে এবং সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীদের আস্থা সঙ্কট আর আতঙ্কে সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ধসের ঘটনা ঘটে। তবে এ ধসের যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। ধসের কবলে পড়ে ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেক কমে যায়।

বিক্রির চাপের কারণে মূলত শেয়ারবাজারে ধস নামে। ছোট-বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীর কাছ থেকেই বিক্রির চাপ আসে। এ পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বড় বড় ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে বিক্রির চাপ কমানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়। আবার যারা ধসের আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করেন, তাদের অনেকে শেয়ার কিনছেন। এতে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বড় ধরনের ধসের কবলে পড়ে পুঁজিবাজার। মঙ্গলবার পর্যন্ত শেষ আট কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্সের ৪১১ পয়েন্ট পতন হয়। এতে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করা সূচকটি শুরুর অবস্থানের নিচে নেমে যায়।

এদিকে শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থাকে ২০১০ সালের মহাধসের থেকেও খারাপ বলে অভিহিত করেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। দরপতনের প্রতিবাদ জানাতে মতিঝিলে অবস্থিত ডিএসইর আগের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন কিছু বিনিয়োগকারী।

পুঁজিবাজারের এই অবস্থার ভয়াবহতা অনুধাবন করে ২০ জানুয়ারি জরুরি বৈঠক ডেকেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে এ পর্যন্ত যতগুলো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে সর্বোত্তম প্রস্তাব বাস্তবায়নে সহায়তা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রতিনিধিরা। বৈঠ‌কে সিনিয়র সচিব জানান সংকট উ‌ত্তোর‌ণে সরকারি চার ব্যাংককে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়া‌তে বলা হ‌য়ে‌ছে ব‌লে জানান তি‌নি।

এরপর আজ সরকারি চার ব্যাংকের ত্রৈমাসিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।


আগামীনিউজ/এএম