ঢাকাঃ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে ঢাকা-সিলেট বাণিজ্য করিডোরে গতিশীলতা, সড়ক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক বাণিজ্যের অগ্রগতির জন্য ১.৭৮ বিলিয়ন ডলারের মাল্টিট্রাঞ্চ ফাইন্যান্সিং সুবিধা (এমএফএফ) অনুমোদন করেছে। ঢাকা-সিলেট করিডোরের কাজ সম্পন্ন হলে তা চট্টগ্রাম বন্দরকে আখাউড়া, শেওলা ও তামাবিল স্থলবন্দরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে সংযোগকারী নতুন বাণিজ্য রুট চালু রাখতে সহায়তা করবে। সেখান থেকে ভুটান ও মিয়ানমার পর্যন্ত সংযুক্ত করবে।
শুক্রবার এডিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, এই করিডোরটি সরকারের পরিকল্পিত উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ অর্থনৈতিক করিডোরেরও প্রধান কেন্দ্র, যার লক্ষ্য এই অঞ্চলের প্রধান শিল্প, যেমন-বিদ্যুৎ উৎপাদন ও নির্মাণ সামগ্রী উৎপাদন এবং দেশের অর্থনীতির সাথে তাদের আরো ভালোভাবে সংহত করা।
এডিবির দক্ষিণ এশিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ সাতোমি সাকাগুচি বলেন, ‘বাংলাদেশের রফতানিমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আঞ্চলিক পরিবহন ও বাণিজ্য কেন্দ্র হয়ে ওঠার অনন্য সম্ভাবনা ও সুযোগ দেখিয়েছে। এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে দেশের পরিবহন অবকাঠামো উন্নত করা দরকার।’
সাতোমি যোগ করেন, প্রকল্প সড়কটি দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি) কর্মসূচির আওতায় ৫ নম্বর রোড করিডরের প্রধান অংশ। এর উন্নতি পরিবহন খরচ কমাবে, প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তা করবে এবং সেইসাথে কমিউনিটি সদস্যদের নিরাপদ প্রবেশাধিকার প্রদান করবে।’
এডিবি বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, এর মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রকল্পটি সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে অবদান রাখবে।
এসএএসইসি ঢাকা-সিলেট করিডোর রোড ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্প চারটি কিস্তিতে সরবরাহ করা হবে।
এমএফএফের ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রথম কিস্তিটি ঢাকা-সিলেট করিডোরের জাতীয় সড়ক-২-এর প্রায় ২১০ কিলোমিটার দুই লেন থেকে চার লেনে প্রশস্তকরণের প্রধান চুক্তির প্রাথমিক কাজের অর্থায়নে সহায়তা করবে।
এতে ৬০ কিলোমিটার ফুটপাথ, ২৬টি ফুটব্রিজ ও ১৩টি ওভারপাস অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর নকশায় প্রবীণ, নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধদের জন্য সুবিধা ও জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলার ব্যবস্থা থাকবে।
২.৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৯১১ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে সরকার। এমএফএফ ছাড়াও, এডিবি তার প্রযুক্তিগত সহায়তা বিশেষ তহবিল থেকে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রযুক্তিগত সহায়তা অনুদান এবং সড়ক নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ-সমতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে জাপান সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ জাপান দারিদ্র্য প্রশমন তহবিল থেকে অতিরিক্ত দুই মিলিয়ন অনুদান প্রদান করা হবে।
এসএএসইসি সদস্যদের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে পরিবহন ও বাণিজ্য সুবিধা অন্যতম, যা ২০০১ সাল থেকে এই অঞ্চলে ১৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে, যার মধ্যে ১১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ৪৩টি পরিবহন প্রকল্প রয়েছে।
সূত্র : বাসস