করোনায় বেড়েছে সবজির দাম

প্রভাত আহমেদ এপ্রিল ১০, ২০২১, ০১:২৩ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

ঢাকাঃ সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পটল, বেগুন, শিম, ধুন্দল, বরবটি, ঢেঁড়স, লাউ, টমেটোসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। করোনায় বিধিনিষেধ আরোপের কারণে সবজির গাড়ি কম আসায় এই দাম বেড়েছে। 

এদিকে এক সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিন ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও এখন তা আবার বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি আবার আগের দামে ফিরে গেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী ও লাল লেয়ার মুরগির দাম।

আজ শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। শবেবরাতের আগে থেকেই এই দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। তবে করোনায় বিধিনিষেধ আরোপের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকায় নেমে এসেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবারও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা বিক্রি হয় বেশিরভাগ বাজারে।

ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি গত মঙ্গলবার সোনালী মুরগির দামও কমে। ৩৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এই মুরগির দাম একবারে কমে ২৬০ থেকে ২৪০ টাকায় নেমে আসে। গত কয়েকদিনে এই মুরগির দাম আর পরিবর্তন হয়নি। আর দীর্ঘদিন ধরে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি এখনো ওই দামেই বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী শরিফুল বলেন, গতকাল ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ পাইকারিতে দাম বাড়ায় ১৬০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। শুক্রবার হওয়ার কারণে এই দাম বেড়েছে বলে আমাদের ধারণা।

এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে একমাত্র এই সবজিটির দাম কমেছে।


অপরদিকে পটল, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়সের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

দাম বাড়ার তালিকায় থাকা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে।

এর পাশাপাশি পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে ছিল।

বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়লেও ফুলকপি ও বাঁধাকপি আগের মতো ৩০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল, চিচিঙ্গা কিনতেও ভোক্তাদের ৫০ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা। শশা আগের সপ্তাহের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজার থেকে এখন শাক এক আঁটি কিনতে ১০ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লালশাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমিশাক। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এক আঁটি ডাটা কিনতে লাগছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল আলিম বলেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ এমনিতেই কমে গেছে। এর সঙ্গে এখন লকডাউনের কারণে সবজির গাড়ি কম আসছে। এসব কারণেই সবজির দাম একটু বেড়েছে।

ঢাকায় সবজির গাড়ি আসতে সমস্যা হচ্ছে কি-না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবজির গাড়ি আসতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে ব্যাপারীরাই মাল কম পাঠাচ্ছেন। মাল বেশি পাঠালে যদি ঠিকমতো দাম না পাওয়া যায়, তেমন আশঙ্কা করেই হয় তো ব্যাপারীরা মাল কম আনছেন।

রামপুরায় সবজি বিক্রি করা সুমন মুন্সী বলেন, আড়তে অন্যসময়ের তুলনায় গত কয়েকদিন মাল কম আসছে। দামও বাড়তি। বাড়তি দামে কেনার কারণে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

তিনি বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ কমে আসায় এমনিতেই কয়েকদিন ধরে সবজির দাম বাড়ছিল। এর মধ্যে লকডাউন এসে দাম বাড়ার প্রবণতা আরও উসকে দিয়েছে। আমাদের ধারণা সহসা আর সবজির দাম কমবে না।

প্রায় একই ধরনের কথা বলেন মালিবাগের সবজিবিক্রেতা মিলন। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই এখন সবজির দাম বাড়ার কথা। কারণ শীতের সবজি প্রায় শেষ। এর মধ্যেই লকডাউন এসেছে। লকডাউনের কারণে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। আর সরবরাহ কমলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

আগামীনিউজ/প্রভাত