গার্মেন্ট শ্রমিকদের ২০ শতাংশ উৎপাদনশীলতা হ্রাসের কারণ অপুষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০, ০৭:০৭ পিএম

বাংলাদেশে গার্মেন্ট শ্রমিকদের অপুষ্টির কারণে ২০ শতাংশ উৎপাদনশীলতা  কমে যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে, খাদ্য ও পুষ্টিসংক্রান্ত তথ্যসমূহ, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবারের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি এ খাতের  শ্রমিক-কর্মচারীদের ব্যবস্থাপকগণের খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে নজর দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন আলোচকরা। তারা বলেছেন, এক্ষেত্রে, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে খাদ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে হবে।

রোববার (৯ ফেব্রুযারি) রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যৌথ উদ্যোগে ‘পোশাক শিল্পখাতে মৌলিক পুষ্টি ও খাদ্য সরবরাহ বিষয়ক প্রশিক্ষণ’ কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম।

কর্মশালায় আলোচকরা জানান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এর-২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ২১ শতাংশ আসে পোশাক শিল্পখাত থেকে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর (২০১৮-১৯ অর্থবছর) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১১ দশমিক ৭ শতাংশ আসে এই খাত থেকে। এরকম বিকাশমান খাতও হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে এই শিল্প খাত। বিশেষত যাদের শ্রমে এই শিল্প টিকে আছে সেই কর্মরত নারী পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে প্রায়ই ৪৩ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদী অপুষ্টির শিকার।

ইন্টারন্যাশনাল লেবার অফিস (আইএলও)-এর ২০১৪ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে পোশাক খাতের শ্রমিকদের ২০ শতাংশ উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।  

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমফ্রুভড নিউট্রিশনের (জিএআইএন) সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জিএআইএন-এর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, জাতীয় পুষ্টিসেবার (জনস্বার্থ পুষ্টি প্রতিষ্ঠান) লাইন ডিরেক্টর ডা. এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ এম্প্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, গেইন এর পোর্টফোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়।

কর্মশালায় জানানো হয়, বর্তমানে পোশাক শিল্পে প্রায় ৩৫ লাখ থেকে ৪২ লাখ শ্রমিক কাজ করেন; যাদের ৬০-৮০ শতাংশই হচ্ছে নারী। সচেতনতার অভাব, খাদ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে জ্ঞানের স্বল্পতা এবং সীমিত আয়ের কারণে এই শিল্পে নিয়োজিত অধিকাংশ শ্রমিক পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত।

 

আগামীনিউজ/ইমরান/মামুন