আড়ংয়ের ট্রায়াল রুমে গোপন ভিডিও করে নারী সহকর্মীকে `ব্ল্যাকমেইল ‍‍`

নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৮, ২০২০, ০১:৫৭ এএম

ঢাকাঃ সহকর্মীর কাপড় পরিবর্তনের দৃশ্য গোপনে ভিডিও করে তা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে আরেক সহকর্মীকে শারিরীক সম্পর্কে জড়াতে চেয়েছিলো। রাজধানীর বনানীর আড়ংয়ের আউটলেটের সহকর্মীর বিরুদ্ধে ‘ট্রায়াল রুমে গোপন ভিডিও’ করার অভিযোগ এনেছেন ভুক্তভোগী এক তরুণী।

অভিযোগে ওই তরুণী বলেন, সে বনানী আড়ংয়ের আউটলেটে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। একই আউটলেটে কর্মরত অবস্থায় তারই সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম সজীব গোপনে ট্রায়াল রুমে তার পোশাক পরিবর্তন করার ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য চাপসহ বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে।

এসব অভিযোগ এনে সিরাজুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে বনানী থানায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী। ১৬ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে, আড়ং কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী ওই তরুণী অভিযোগ করে বলেন, গত ১১ জানুয়ারি রাতে বনানী আড়ংয়ের সাবেক সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম সজীব তার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একটি ভিডিও পাঠায়। তিনি ভিডিওটি খুলে দেখেন যে, বনানী আড়ংয়ের আউটলেটের ট্রায়াল রুমে তার পোশাক পরিবর্তন করার দৃশ্য। পরে একই রাতে সজীব তাকে ভিডিও কলে এসে শরীর দেখাতে বলে এবং এর পরের দিন তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাপ দেয়। পরে তিনি এসব বিষয়ে রাজি না হলে তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় সজীব।

পরে তরুণীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা পায়। মামলার তদন্তে পুলিশ একই আউটলেটের ট্রায়াল রুমে সজীবের করা এমন আরো অনেক গোপন ভিডিও এর সন্ধান পায়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা জানায়, ২০১৯ সালে বনানী আড়ংয়ে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সময় সজীব ভুক্তভোগী তরুণীসহ তার আরো চার সহকর্মীর পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও ধারণ করেন। পরে সে এসব ভিডিও সহকর্মীদের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য চাপ দিতেন। কেউ রাজি না হলে গোপন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন।

কর্মকর্তারা আরো জানায়, গত বছর এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করার দায়ে ডিসেম্বরে সজীবকে চাকরিচ্যুত করে আড়ং। কিন্তু নিজেদের ব্র্যান্ড রেপুটেশন নষ্ট হওয়ার ভয়ে এ বিষয়ে আড়ং পুলিশে কোনো অভিযোগ করেনি। শুধুমাত্র তাকে চাকরিচ্যুত করে দায়িত্ব সারে আড়ং। ফলে সজীবের কাছে থাকা গোপন ভিডিওগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে তার কাছে থাকা ভিডিও থেকেই একটি ভিডিও পাঠিয়ে গত ১১ তারিখ রাতে ওই তরুণীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন সজীব।

ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম  বলেন, অভিযুক্ত  সজীবকে ২৫ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয়েছে। সজীবের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।


আগামী নিউজ/ মোরসু/এমএন